গত মে মাসে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশের জেলা পঞ্চায়েত সদস্য নির্বাচনেও গোহারা হেরেছিল বিজেপি। কিন্তু তার দু’মাসের মধ্যে গত কাল পঞ্চায়েতের অধ্যক্ষ বাছাইয়ের ভোটে গেরুয়া ঝড়! রাজনৈতিক স্রোতের উল্টো দিকে গিয়ে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগরে কৃষক আন্দোলনের নেতা রাকেশ টিকায়েতের প্রার্থী হেরে গিয়েছেন বিজেপি সমর্থিত প্রার্থীর কাছে! সপা নেতা মুলায়ম সিংহ যাদবের গড় মইনপুরিতেও তিরিশ বছর পরে বিজেপির প্রার্থীর কাছে হার মেনেছেন সপা প্রার্থী! গান্ধী পরিবারের ঐতিহ্যবাহী রায়বরেলী এবং অমেঠীতেও প্রথম বার জিতলেন বিজেপি সমর্থিত প্রার্থী। মোট ৭৫টি পদের মধ্যে ৬৭টিতে জিতেছেন বিজেপি সমর্থিত প্রার্থী। এসপি সমর্থিত জয়ী প্রার্থীর সংখ্যা মাত্র ৫।
প্রসঙ্গত, সপা নেতা তথা উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব ভোটের আগেই যে অভিযোগ করেছিলেন ফের তারই পুনরাবৃত্তি করে বলেছেন, ‘প্রশাসনে থাকার সুযোগ নিয়ে ব্যাপক কারচুপি করেছে বিজেপি। তারা তাদের অর্থবল, বাহুবল এবং প্রশাসনিক বল পুরোটাই প্রবল ভাবে কাজে লাগিয়েছে।’ পুলিশ দিয়ে ভোটার অপহরণ করার অভিযোগ এনেছেন অখিলেশ। তাঁর বক্তব্য, ‘এই পঞ্চায়েত সদস্যেরা দু’মাস আগেই বিজেপির বিরুদ্ধে জিতে এলেন। এখন তাঁরাই তাঁদের অধ্যক্ষ হিসেবে বিজেপি সমর্থিত প্রার্থীকে বেছে নিতে পারেন না।’ অন্যদিকে, জেলা পঞ্চায়েতের অধ্যক্ষ নির্বাচনের মতো বিষয় নিয়ে টুইট করতে দেখা গিয়েছে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, বাংলায় ধাক্কার পরে উত্তরপ্রদেশকে কী ভাবে পাখির চোখ করেছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব তা মোদীর এই গর্বিত টুইট থেকে বোঝা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, সপা সমর্থিত প্রার্থীরা জিতেছেন এটাওয়া, আজমগড়, বালিয়ার মতো কেন্দ্র থেকে। আরএলডি সমর্থিত প্রার্থী জিতেছেন বাঘপথে। অখিলেশের কথায়, ‘রাজ্য পুলিশ এবং জেলা প্রশাসন বিজেপি সমর্থিত প্রার্থীদের জেতানোর জন্য খোলাখুলি মাঠে নেমেছিল।’ তাঁর বক্তব্য, ‘এটা খুবই আশ্চর্যের যে বেশিরভাগ জেলা পঞ্চায়েত সদস্য সপার। তাহলে কী করে তার অধ্যক্ষের পদে বিজেপি বেশি ভোট পায়? তারা প্রকাশ্যে লোক ঠকিয়েছে। প্রশাসনিক কর্তারাও এতে যুক্ত।’ অখিলেশের অভিযোগ, গেরুয়াবাহিনী সমস্ত গণতান্ত্রিক নিয়মনীতিকে লঙ্ঘন করে অবাধ নির্বাচনের নামে ‘প্রহসন’ করেছে। তাঁর কথায়, ‘রাষ্ট্রশক্তির এমন কদর্য মুখ এর আগে কেউ কখনও দেখেনি। পরাজয়কে জয়ে পরিণত করতে তারা ভোটারদের অপহরণ করেছে পুলিশকে কাজে লাগিয়ে। ভোটেও জাল করা হয়েছে। আমাদের কর্মীরা প্রতিবাদ করতে গেলে দুর্বব্যবহার করা হয়েছে।’