কেন্দ্রের তরফে বিনামূল্যে দেশবাসীকে ভ্যাকসিন দেওয়ার দাবি তুলেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অন্যান্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। তার ফলে চাপে পড়ে শেষমেশ টিকাকরণের দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নিয়েছে কেন্দ্র। তবে তার পরেও জোগানে ঘাটতি নিয়ে অভিযোগ উঠে আসছে ভূরি ভূরি। কেন্দ্রের দাবি, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের সব প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। আদৌ কি সেই লক্ষ্য পূরণ হবে? এ যাবৎ টিকাকরণের পরিসংখ্যান দেখে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা দিয়ে কেন্দ্র জানায়, দেশের প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যা প্রায় ৯৪ কোটি। এ বছরের মধ্যেই সকলের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। গত সাত দিনে দেশে টিকাকরণের গড় ৪০ লক্ষের আশেপাশেই রয়েছে। তাতেই সার্বিক টিকাকরণের লক্ষ্য আদৌ পূরণ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। দেশে টিকাকরণের যাবতীয় তথ্য কো-উইন অ্যাপে নথিভুক্ত করা হয় প্রতিনিয়ত। শনিবার দুপুর সাড়ে ৩টে পর্যন্ত যে হিসেব পাওয়া গিয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে, এ পর্যন্ত মোট প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার মধ্যে এখনও পর্যন্ত মাত্র ৬ কোটি ১৫ লক্ষ ৭৫ হাজার ৭৩৮ জনেরই টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়েছে। অর্থাৎ দু’টি করে টিকাই পেয়ে গিয়েছেন তাঁরা। একটি করে টিকা পেয়েছেন ২৮ কোটি ১১ লক্ষ ৫২ হাজার ৪০৩ জন নাগরিক।
সেই নিরিখে একটি করে টিকা পাওয়া সকলকেও দ্বিতীয় টিকা দিতে হবে। আবার কোনও টিকাই পাননি যে ৫৯ কোটি ৭২ লক্ষ ৭১ হাজার ৮৫৯ জন নাগরিক। তাঁদের টিকাকরণ সম্পূর্ণ করতে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৮১ দিন সময় রয়েছে সরকারের হাতে। কোনও টিকাই পাননি যে ৫৯ কোটি ৭২ লক্ষ, তাঁদের একটি করে টিকা দিতে দৈনিক ৩৩ লক্ষ করে টিকা দিতে হবে কেন্দ্রকে। আর একটি করে টিকা পেয়েছেন যাঁরা এবং যাঁরা কোনও টিকাই পাননি, তাঁদের সকলের টিকাকরণ সম্পূর্ণ করতে দৈনিক ৮১ লক্ষ ৫৩ হাজারটি করে টিকা দিতে হবে সরকারকে। কেন্দ্র টিকাকরণের দায়িত্ব নিলেও এখনও জোগানে ঘাটতি রয়েছে ব্যাপক। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, তা পূরণ করা না গেলে সমূহ বিপদ রয়েছে সামনে।