একদিকে জনগণের রায়ে বিপুল সংখ্যাধিক্য নিয়ে তৃতীয়বার মসনদে আসীন সরকার। অন্যদিকে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যপালের ক্রমাগত আক্রমণ। দুয়ের জেরে নিত্যনতুন বিতর্কের জন্ম, এমনকী, সরকারের লিখে দেওয়া বক্তব্য বিধানসভায় পাঠ করার প্রচলিত গণতান্ত্রিক প্রথাও মানতে নারাজ জগদীপ ধনকর। আর এহেন বৈরিতার আবহেই আজ শুক্রবার শুরু হচ্ছে বিধানসভার বাজেট অধিবেশন। রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে অধিবেশন উদ্বোধনের কথা থাকলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে ধনকর শেষমেশ কী করবেন, সেদিকেই নজর সকলের।
স্বাধীনতার পর থেকে ধরলে সমস্ত রেকর্ড ভেঙে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল সরকার। কিন্তু সরকার গঠন ইস্তক নবান্ন ও রাজভবনে দ্বৈরথ তুঙ্গে। দুই শিবিরের বিতর্কে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। বিতর্কে জড়িয়েছে বিধানসভা, জল গড়িয়েছে দিল্লী পর্যন্ত। এমতাবস্থায় আজ স্বাভাবিকভাবেই নজরের কেন্দ্রে বিধানসভা, যেখানে রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে বাজেট অধিবেশনের সূচনা হওয়ার কথা। রেওয়াজ অনুযায়ী, রাজ্যের লিখে দেওয়া বক্তব্যই রাজ্যপাল পাঠ করবেন। কিন্তু রাজ্যের তরফে রাজভবনে সেই বক্তব্যের যে খসড়া পাঠানো হয়েছে, তা পাঠ করতে তাঁর আপত্তি আছে বলে রাজ্যপাল প্রকাশ্যে জানিয়ে দিয়েছেন। যদিও নবান্ন আপন অবস্থানে অনড়, সরকারের লিখে দেওয়া বক্তব্যই রাজ্যপালকে পড়তে হবে বলে তাদের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এবার ধনকর কী করবেন? এই মুহূর্তে এটাই কোটি টাকার প্রশ্ন। রাজ্যপালের মনোভাব আঁচ করে, সম্ভাব্য সব রকম পরিস্থিতি মোকাবিলায় শাসকদল যথাসাধ্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাজ্যপালের ভাষণের সময় দলের সমস্ত বিধায়ককে অধিবেশনে হাজির থাকার নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। বড় কোনও কারণ ছাড়া সকলকে হাজির থাকতে হবে বলে হুইপও জারি করেছেন সরকারপক্ষের মুখ্যসচেতক। সব মিলিয়ে একুশের বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের সূচনা যথেষ্ঠ চিত্তাকর্ষক হতেই পারে।