প্রথমে ১২০০ ভোটে তিনি জিতেছেন বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু তার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই রিটার্নিং অফিসার ঘোষণা করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ১৯৫৬ ভোটে হারিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। এরপরই গণনায় গরমিলের অভিযোগ তুলে তৃণমূল নেত্রী জানিয়ে দেন, ‘গোটা রাজ্যের থেকে আলাদা রায় দিল নন্দীগ্রাম। এটা হতে পারে না। আমি আদালতে যাব। আমার কাছে খবর আছে, ভোটের ফল ঘোষণার পর কারচুপি হয়েছে। সেটা খুঁজে বের করব।’ সেই মামলা এখন হাইকোর্টে বিচারাধীন। এর মধ্যেই রেয়াপাড়ার একটি বুথের ফল নিয়ে তৈরি হল চাঞ্চল্য। ভোটার ৬৭৬। ভোট পড়েছে ৭৯৯। তাজ্জব করে দেওয়ার মতো এই ঘটনা ঘটেছে নন্দীগ্রামের রেয়াপাড়ার এস এন রায় স্কুলের বুথে।
প্রসঙ্গত, ২ মে ফলপ্রকাশের দিনই মমতা অভিযোগ করেছিলেন, নন্দীগ্রামে কারচুপি হয়েছে। আদালতে যাবেন। সপ্তাহ দুয়েক আগে হাইকোর্টে মামলাও করেছেন তৃণমূল নেত্রী। এবার দেখা গেল তার অভিযোগ আদৌ ভিত্তিহীন নয়। রেয়াপাড়ার এস এন রায় স্কুলের বুথের ‘অ্যাকাউন্ট অব ভোটস রেকর্ডেড’-এ স্পষ্ট লেখা রয়েছে, ভোটার সংখ্যা ৬৭৬। ভোটদান ৭৯৯। কিমাশ্চর্যম! সংখ্যাতত্ত্বের এমন উলট-পুরাণ দেখেও চোখে পড়েনি প্রিসাইডিং অফিসারের। স্বাক্ষর করে দিয়েছেন ফর্ম ১৭ সি-তে। তৃণমূলের বক্তব্য, তাদের অভিযোগই সঠিক বলে প্রমাণিত হচ্ছে। নন্দীগ্রামের একাধিক জায়গায় গরমিল হয়েছে।
ওই নথি প্রকাশ্যে আসার পরই দলের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, ‘রেয়াপাড়ার বুথের হিসাবে তো চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার জোগাড়। এটা কী করে সম্ভব? একটা বুথে ১০০-র কাছাকাছি গরমিল। এটা ৮০ ধরুন। একটা বুথে ৮০ হলে বাকিগুলিতে কী হয়েছে ভাবুন! আমরা তো প্রথম থেকে বলে আসছি এই ব্যাপারটার মধ্যে বিরাট জঘন্য খেলা হয়েছে।’ নন্দীগ্রামে মমতার নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ানের কথায়, ‘ওই দিন শেষের দিকে ৩ ঘণ্টা গণনা বন্ধ করে দেয়। হঠাৎ বলে সার্ভার নেই। তাতেও ১ ঘণ্টা দেরি হয়। ভিভিপ্যাট গোনার সময় আমাদের রাখেনি। এমনকি গণনার সময় বিরোধী দলের চাপে আমাদের নতিস্বীকার করে বেরিয়ে আসতে হয়।’