খুব শীঘ্রই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ হবে। বিজেপির শীর্ষ নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে একের পর এক বৈঠক করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাই বাংলার প্রচারমাধ্যম এবং রাজনৈতিক মহলে এই মুহূর্তে জোর আলোচনা, কারা এই নতুন মন্ত্রিসভায় জায়গা পাবেন তা নিয়ে। মুখে মুখে ঘুরছে একাধিক নাম। কিন্তু সূত্রের খবর, চর্চা যেমনই হোক হাতে পড়ে থাকবে হয়তো পেন্সিল। রাজ্যের দু-একজন নেতাদের ভাগ্যে জুটতে পারে বড়জোর রাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ, কারণ কেন্দ্রের ফোকাস আপাতত বাংলা নয়। এই তত্ত্ব নিছক জল্পনা যে নয়, তা বোঝাতে রাজনৈতিক মহলের গূঢ় ব্যাখ্যাও উঠে আসছে।
প্রসঙ্গত, তাঁর সরকারের প্রথম দফায় এক বছরের মধ্যেই মমন্ত্রিসভায় রদবদল ঘটিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় করোনার কারণে সেই সুযোগ পাননি তিনি। এদিকে সামনেই এক যোগে উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, গুজরাত, গোয়া, মনিপুর, পাঞ্জাবে ভোট রয়েছে। বিজেপির অন্দরের খবর, তাই বাংলা নয় এই রাজ্যগুলির ভোটকে মাথায় রেখেই রদবদল হতে পারে। তাছাড়া, এনডিএ শরিকরাও নাকি বিজেপিকে চাপ দিচ্ছে সরকারে আরও বেশি প্রতিনিধিত্বের দাবিতে। এই অবস্থায় মন্ত্রিসভায় রদবদল না আনলে আবার বাংলার মতো ভরাডুবির আশঙ্কা করছে বিজেপির নেতৃত্ব, এরকম খবর শোনা যাচ্ছে।
শোনা যাচ্ছে ২৭টি নতুন মুখ আসতে পারে মন্ত্রিসভায়। প্রাধান্য পেতে পারে উত্তরপ্রদেশ এবং পাঞ্জাব। তবে বাংলা থেকে নতুন মুখ যোগের সম্ভাবনা তো নেই, বরং বর্তমান মন্ত্রীদেরও পদোন্নতি নাও হতে পারে। ব্যতিক্রম দেবশ্রী চৌধুরী। নারী ও শিশুকল্যাণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী তাই পেতে পারেন পূর্ণমন্ত্রীর মর্যাদা। তবে, বিধানসভা নির্বাচনে টালিগঞ্জ কেন্দ্রে লজ্জার হার এবং তাঁর লোকসভা আসন আসানসোলের অন্তর্গত ৭টি আসনে ৫টিতে বিজেপির পরাজয়ের পরও যদি বাবুল সুপ্রিয়র মন্ত্রিত্ব বজায় থাকে, সেটাই তাঁর কাছে বড় পাওনা বলে মনে করছেন অনেকেই।
অসামরিক বিমান পরিষেবা এবং আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী একজন পাঞ্জাবি। তিনি রাজ্যসভায় প্রতিনিধিত্ব করেন উত্তরপ্রদেশের। সুতরাং, পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি আরও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক পেতে পারেন, এমনটাই শোনা যাচ্ছে। আবার, ২০২০-র মার্চ মাসে ২২ বিধায়ক নিয়ে কংগ্রেস ছাড়েন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। ফলে পতন হয় মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস সরকাররের। তার হাত ধরেই রাজ্যে ক্ষমতায় আসে বিজেপি। তার পুরস্কার স্বরূপ এবার হরদীপের জায়গায় অসামরিক বিমান পরিষেবা মন্ত্রী হতে পারে তাঁকে। তার বাবা মাধবরাও সিন্ধিয়া দীর্ঘকাল এই দায়িত্ব সামলেছিলেন।
অন্যদিকে, মন্ত্রিসভার রদবলে বিহারে বিজেপির জোটসঙ্গী জেডিইউ-কে খুশি করতে পারেন মোদী। কারণ, সরকার গঠনের পর থেকেই সে রাজ্যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমশই জটিল হয়ে পড়ছে। নীতিশ কুমারের সঙ্গে মনোমালিন্যও লেগেই রয়েছে। তাই, শরিককে খুশি করতে এবার লোকসভার ডেপুটি স্পিকারের পদ দেওয়া হতে পারে জেডিইউ-এর কোনও সাংসদকে। সূত্রের খবর, শীর্ষ চারটি মন্ত্রকে কোনও রদবদল করবেন না মোদী। অর্থাৎ অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ নিজ নিজ পদেই বহাল থাকবেন।