কসবার ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের পর নাগরিকদের টিকাদানের ব্যাপারে আরও সতর্ক কলকাতা পুরসভা। করোনার টিকা নেওয়ার স্লট অ্যাপে বুক করতে হলে এবার থেকে ওয়ার্ডের নম্বর এবং ফোন নম্বর দিতে হবে। তবেই ভ্যাকসিন নেওয়ার দিনক্ষণ মিলবে। বুধবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে এমনই জানালেন পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। প্রত্যেক ভ্যাকসিন সেন্টারে সিভিসি কোড দেওয়া রয়েছে। সেই কোড না দেখে কেউ যেন সেই কেন্দ্র থেকে ভ্যাকসিন না নেন, এমনই সাবধানবাণী দিয়েছেন মুখ্য প্রশাসক।
টিকা শিবিরে ভুয়ো ভ্যাকসিন-কাণ্ডে গ্রেপ্তার হয়েছেন অন্যতম চক্রী দেবাঞ্জন দেব। উত্তাল রাজ্যের পরিস্থিতি। করোনা সংকটকালে এত বড় প্রতারণার জাল বিস্তৃত হয়েছে শহর কলকাতায়, তা প্রকাশ্যে আসতেই ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এরপরই কলকাতা পুরসভা-সহ গোটা রাজ্যের স্বাস্থ্যবিভাগ সতর্ক হয়েছে। ভ্যাকসিন নিয়ে প্রতারণা রুখতে একাধিক নতুন নিয়ম স্থির হয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে। এছাড়া বিভিন্ন পুরসভা, হাসপাতালগুলি এই নয়া নিয়মের উপর ভিত্তি করে আরও কঠোর করেছে নিজেদের নিয়মাবলি।
এমতাবস্থায় দ্বিতীয়বার বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। বুধবার তিনি বলেন, “ভ্যাকসিনেশনের জন্য যে অ্যাপ ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতে এবার টিকা নিতে গেলে নাগরিকদের নিজেদের ওয়ার্ড নং এবং ফোন নম্বর দিতে হবে। তাহলে পরবর্তীতে তাঁদের চিহ্নিত করা সহজ হবে।” সরকার অনুমোদিত নয়, এমন যে কোনও শিবির বেআইনি বলে আগেই ঘোষণা করেছিল স্বাস্থ্যদপ্তর। এবার ফিরহাদ হাকিমও জানালেন, “যে সেন্টারের বাইরে সিভিসি কোড থাকবে না, সেখান থেকে কেউ ভ্যাকসিন নেবেন না।”
একাধিক সতর্কবার্তা দেওয়ার পাশাপাশি এদিন কেন্দ্রের টিকাবণ্টন নীতি নিয়েও সরব হন কলকাতার মুখ্য প্রশাসক। রাজ্যে টিকার অভাব আছে, তা মেনে নিয়ে অভিযোগের সুরে বলেন, কেন্দ্রের থেকে যে পরিমাণ টিকা চাওয়া হচ্ছে, তা কখনও পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ অন্যান্য রাজ্যে চাহিদামতো টিকা পৌঁছে যাচ্ছে। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আরও একবার এই অভিযোগ তুলেছিলেন। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ফের চিঠি লিখবেন বলেও জানান তিনি। রাজ্য সরকারের ইঙ্গিত, কেন্দ্র চাহিদা অনুযায়ী রাজ্যে ভ্যাকসিন না পাঠানোর জেরেই এ ধরনের ভুয়ো চক্রের আনাগোনা।