গতকাল, সোমবারই নবান্ন থেকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, মঙ্গলবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে আরও একপ্রস্থ আক্রমণ শানাল তৃণমূল। শাসক দলের দাবি, ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজ্যপাল সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন৷ ধনকর মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরির চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়৷ পাশাপাশি, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ফের একবার রাজ্য ভাগের চক্রান্ত করার অভিযোগও তুলেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু৷ তিনি বলেন, রাজ্যপাল দার্জিলিংয়ে গিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন৷
রাজ্যপাল অভিযোগ করেছিলেন, জিটিএ-তে আর্থিক গরমিল রয়েছে৷ ক্যাগ-কে দিয়ে অডিট করানোর হুঁশিয়ারিও দেন তিনি৷ এদিন তার পালটা দিয়ে ব্রাত্য জানান, ‘জিটিএ আইনে পরিষ্কার বলা আছে যে জিটিএ পার্বত্য বিষয়ক দফতরের মন্ত্রীর অধীনে থাকবে৷ এই দফতরের দায়িত্বে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই৷ রাজ্যপাল চাইলেই সেই হিসেব তাঁর কাছে পৌঁছে যেত৷ কিন্তু সরকারের কাছে সেই হিসেব না চেয়ে তিনি সংবাদমাধ্যমে সরকারের বদনাম করছেন৷ তিনি নিজেকে রাজ্যের অভিভাবক বলে দাবি করেন৷ অথচ আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে যখন কেন্দ্রীয় সরকার হেনস্থা করছে, তখন তিনি চুপ করে ছিলেন৷’
ধনকরকে ‘শোলে’ সিনেমার সুরমা ভুপালির সঙ্গে তুলনা করে ব্রাত্যর কটাক্ষ, আমরা শোলে সিনেমাতে সুরমা ভুপালিকে দেখেছিলাম। সারাক্ষণ যিনি হম্বিতম্বি করতেন। পরে জানা যায় তিনি নিজেই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। রাজ্যপালও তাঁর মতোই। রাজ্যপালের যদি কোনও হিসেব জানার হতো তবে তা তিনি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছেই চাইতে পারতেন। তা না করে কেন তিনি দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন এদিন সেই প্রশ্নও তোলেন ব্রাত্য। রাজ্যপাল যেভাবে রাজ ভবনে বেসরকারি সংবাদমাধ্যমকে ডেকে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করছেন বা নিয়মিত টুইটারের মতো সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করছেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষামন্ত্রী৷
এদিন তিনি বলেন, ‘এই গেজেট গুলি রাজ্যপাল আদৌ ব্যবহার করতে পারেন কি না, করলেও তার রূপরেখা কী হবে, সংবিধানে তার কোনও ব্যাখ্যা নেই৷ কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে নির্দিষ্ট গাইডলাইন তৈরি করে দিক৷ কারণ অনেক রাজ্যপালই নিয়মিত এগুলি ব্যবহার করছেন৷ উনি দিল্লিতে গিয়ে সাধারণত প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে ব্যস্ত থাকেন, কিন্তু ওনার যিনি আসল বস, সেই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার বিষয়ে তিনি সেরকম উৎসাহ দেখান না৷’ কটাক্ষের সুরে ব্রাত্য বলেন, রাজ্য বিজেপি সভাপতিকে ব্যর্থ প্রমাণ করতে নিজেই সেই ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন রাজ্যপাল৷