বিধানসভা নির্বাচনে এসেছে বিপুল সাফল্য। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে কোনো বিজয়সমাবেশের আয়োজন করেনি তৃণমূল। আগামী ২১শে জুলাইয়ের সভাও কি ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে? নাকি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নতুন কোনও ব্যবস্থা? যা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে তৃণমূল শিবিরে। এই পরিস্থিতিতে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দলের ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচী কীভাবে হবে, তা পরে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
কোভিড পরিস্থিতির জেরে গত বছর ২১শে জুলাইয়ের করেনি তৃণমূল। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, বুথে বুথে পালন করা হবে শহিদ দিবসের কর্মসূচি। বুথভিত্তিক জমায়েত ছিল ২৫ জনের মতো। আর ধর্মতলাতে শহিদ বেদি করে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বিগত বছরে ভার্চুয়াল সভার পথেই হাঁটার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্যের শাসক দল। কালীঘাট থেকে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্য রেখেছিলেন। নেত্রীর বক্তব্য ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের দৌলতে পৌঁছে যায় রাজ্যের গ্রাম থেকে শহরে। তৃণমূল নেতৃত্ব কলকাতা ও জেলার বিভিন্ন জায়গায় জায়েন্ট স্ক্রিনের মাধ্যমে দলনেত্রীর বক্তব্য তুলে ধরেন। গত বছর ২১শে জুলাই ছিল তৃণমূলের প্রথম ভার্চুয়াল সমাবেশ। এবারের ২১শে জুলাইয়ের সমাবেশ নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে আগ্রহ তুমুল।
এবারের বিধানসভা নির্বাচনে জিতে জয়ের হ্যাটট্রিক করেছে তৃণমূল। তবে বিপুল সাফল্যের পরও কোনও বিজয় সমাবেশ করা হয়নি। করোনা মোকাবিলাতেই বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। করোনা মোকাবিলায় বাস, অটো পরিষেবায় শর্ত স্বাপেক্ষে ছাড় দেওয়া হলেও, কড়াকড়ি বলবৎ রয়েছে ১৫ই জুলাই পর্যন্ত। কিন্তু করোনার জেরে তৈরি হওয়া উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সভা কিভাবে হবে, সেই প্রশ্নটা উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও তৃণমূলের কর্মীরা ২১শে জুলাইয়ের কথা তুলে ধরছেন। এই অবস্থায় ২১শে জুলাইয়ের সভা নিয়ে তৃণমূল নেত্রীর বার্তার দিকেই এখন চোখ রাজনৈতিক মহলের।
উল্লেখ্য, তৃণমূলের রাজনৈতিক আন্দোলনের অন্যতম দিন ২১শে জুলাই। ওই দিনটিতে তর্পণ করা হয় গত ১৯৯৩ সালে পুলিশের গুলিতে শহীদ হওয়া ১৩ জনের স্মৃতি। শহীদ দিবসের মধ্যে দিয়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা একত্রিত হয়ে লড়াইয়ের শপথ নেন। কংগ্রেসে থাকাকালীন কিংবা তৃণমূল তৈরি হওয়ার পর ১৯৯৪ সাল থেকে ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে এই সভা হয়ে আসছে। রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর একমাত্র ২০১১ সালে এই সভা হয়েছিল ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে। তৃণমূলের যে কোনও কর্মীর কাছে এই দিনের গুরুত্ব আলাদা। ফলে রাজ্যের সব জেলা থেকে ওই দিন ধর্মতলামুখী হন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর ২১ জুলাইয়ের সভার দিকেই এখন নজর রাজনৈতিক মহলের।