দেশে তখন সদ্য আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। রোজই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দৈনিক সংক্রমণ। চারিদিকে অক্সিজেন, হাসপাতালের বেডের জন্য হাহাকার। পরিস্থিতি সামাল দিতে বারবারই জমায়েতে রাশ টানার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। ঠিক সেই পরিস্থিতিতেই সংক্রমণের হার একধাক্কায় অনেকটা বাড়িয়ে দেয় উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে কুম্ভমেলায় লক্ষ লক্ষ মানুষের জমায়েত। বহু আন্তর্জাতিক সংস্থাই একে সুপার স্প্রেডার আখ্যা দেয়। সেই কুম্ভমেলাতেই উঠল মারাত্মক বেনিয়মের অভিযোগ। মেলায় আগত সাধু-সন্তদের করোনা পরীক্ষায় মারাত্মক দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
ঠিকানা হরিদ্বার-দেরাদুন-ঋষিকেশ হাইওয়ে, নেপালি ফার্ম। জায়গাটি উত্তরাখন্ডের দেরাদুন জেলার মধ্যে পড়ছে। কুম্ভের হর কি পৌরি ঘাট থেকে জায়গাটির দূরত্ব প্রায় ১১ কিলোমিটার। প্রশাসন সূত্রে খবর, গত এপ্রিল মাসে মহাকুম্ভ চলাকালীন কোভিড পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। দেখা যাচ্ছে, সরকারি হিসাবে একটি নির্দিষ্ট ঠিকানা ব্যবহার করে ৩৮২৫ জনের পরীক্ষা করা হয়েছে। এখানেই বড়সড় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এদিকে সেই অনিয়মের তদন্তের জন্য স্পেশাল ইনভেসটিগেশন টিম তৈরি করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে দেখা যাচ্ছে বার বার একই ফোন নম্বরকে একাধিক টেস্টের ক্ষেত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। একটি নির্দিষ্ট ঠিকানাকে বার বার উল্লেখ করা হয়েছে। এবার ফোন নম্বরের সূত্রে ধরে যাবতীয় বিষয়গুলি যাচাই করতে চাইছে সিট।
তদন্তকারীদের অনুমান, ভুয়ো পরীক্ষা করা হয়েছিল। টেস্ট না করেই সরকারি খাতায় নাম তোলা হয়েছিল। কিন্তু একই ঠিকানা দেওয়ার জেরেই বিষয়টিতে সন্দেহ হয়। পাশাপাশি ভুয়ো পরীক্ষার জেরে কুম্ভ থেকে ফিরে আসা পূণ্যার্থীরা তাঁদের স্থানীয় এলাকাতেও সংক্রমণ ছড়িয়ে থাকতে পারেন। তবে এর পেছনে ল্যাব ও সরকারি কর্মীদের মধ্যে অবৈধ আর্থিক লেনদেনের বিষয়টিও দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি সপ্তাহ দুয়েক আগে ফরিদকোটের এক বাসিন্দার মোবাইলে মেসেজ আসে যে তিনি করোনা টেস্ট করিয়েছেন। কিন্তু তাঁর দাবি, তিনি কোনও পরীক্ষা করাননি। প্রাথমিকভাবে অনমান করা হচ্ছে প্রায় ১ লক্ষ এই ধরণের ভুয়ো পরীক্ষা করা হয়েছে।