সুন্দরবনে ঘূর্ণিঝড় যশের আঘাতের চিহ্ন এখনও জ্বলজ্বল করছে। সেই ক্ষত সুন্দরবনবাসীর মনে আজও স্পষ্ট। এখনও ঘর ছাড়া বহু মানুষ। গত ২৬ মে এসেছিল ঘূর্ণিঝড় যশ। সেইসঙ্গে পূর্ণিমার ভরা কোটাল। জোড়া ফলায় বিদ্ধ হয় সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ঠিক এক মাসের মাথায় আবারও কোটালের জেরে ‘যশ’ আতঙ্ক ফিরছে সুন্দরবনে।
ইতিমধ্যেই আজ সকাল থেকে জল বাড়তে শুরু করে দিয়েছে সুন্দরবনের ছটি ব্লক হিঙ্গলগঞ্জ, হাসনাবাদ, সন্দেশখালি ১-২, হাড়োয়া, মিনাখাঁর গা ঘেঁষে থাকা মাতলা, রায়মঙ্গল, কালিন্দী, ডাসা, বিদ্যাধরী, গৌড়েশ্বর, কলাগাছির মতো নদীগুলিতে। সেই সঙ্গে শুরু হয়ে গিয়েছে বর্ষাকালের লাগাতার বৃষ্টি। তাই ফের সিঁদুরে মেঘ দেখছেন সুন্দরবনের বাসিন্দারা। বর্তমানে ঘর ছেড়ে নদী বাঁধের উপরে কিংবা রাস্তার ধারে ত্রিপল টানিয়ে বসবাস করছেন সন্দেশখালির ভোলাখালি বা ভাঙা তুষখালি কিংবা ন্যাজাট, কালিনগর, ধামাখালি, হাটগাছির সাধারণ মানুষ।
বিপর্যয়ের এক মাস পেরতে একদিন বাকি। এখনও ঘরে ফিরতে পারেনি অনেকে। ফেরার কথাও নয়। কারণ অধিকাংশ বাড়িই ভেঙে নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। কোথাও বা টালি বা বিজলির ছাউনির চালের ভারে মুখ থুবড়ে পড়েছে মাটির বাড়ি। এখন এমনই অবস্থা সুন্দরবনের পথে পথে, জেলার উত্তর থেকে দক্ষিণ সর্বত্র। ঘূর্ণিঝড় যশের তান্ডব ও পূর্ণিমার ভরা কোটালের জোড়া ফলায় একেবারে ভিটেমাটি ছাড়া সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অংশের মানুষ।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যে সমস্ত এলাকায় নদী বাঁধ ভেঙে ছিল, সেই সমস্ত নদী বাঁধ মেরামতি করা হয়ে গিয়েছে। তবে এখনও বেশ কিছু নদীবাঁধ দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। সন্দেশখালির দুটি ব্লক, হিঙ্গলগঞ্জ, মিনাখাঁ এবং হাসনাবাদে অধিকাংশ মানুষ ঘরে ফিরেছে। যাঁরা ফিরতে পারেনি তাঁরা রয়েছে প্রশাসনের আশ্রয়ে। সন্দেশখালি ১ ও ২ নম্বর ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক (বিডিও) সুপ্রতিম আচার্য ও অর্ণব মুখোপাধ্যায়, প্রশাসনের তরফে সব রকমের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেচ দপ্তর, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কোনও জায়গাতে বাঁধ ভাঙলে সঙ্গে সঙ্গে তা মেরামতির ব্যবস্থাও রয়েছে।