ভারতের জেলগুলিতে যেন কোনোভাবেই করোনা সংক্রমণ না ছড়িয়ে পড়ে, সেদিকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ আগেই দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সে নির্দেশে বলা হয়েছিল, মারণ ভাইরাসের সংক্রমণ যেভাবে বাড়ছে তাতে জেলে ভিড় কমাতে দণ্ডিত ও বিচারাধীন, দুই ধরনেরই কিছু কিছু বন্দীকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেতে পারেন ষাটোর্ধ্ব বন্দীরা। শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশকেই সার্বিক স্তরে বাস্তবায়িত করতে এবার উদ্যোগী হলেন দেশের প্রখ্যাত সমাজকর্মী মেধা পাটকর।
সুপ্রিম কোর্টে এই বিষয়ে একটি পিটিশন দাখিল করেছেন মেধা পাটেকর। এই পিটিশনে তাঁর বক্তব্য, করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি প্রবীণদের। আর দেশের বিভিন্ন জেলেই ষাটোর্ধ্ব প্রবীণ আসামিরা রয়েছেন। বিশেষ করে যাঁদের বয়স ৭০ বছর বা তার বেশি, সেইসব বন্দীদের মারণ ভাইরাসের সংক্রমণ ধরে যাওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। এইসব বন্দীদের মুক্তির ব্যবস্থা করা যায় কিনা এবং সেই ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন কী হতে পারে, সে নিয়েই শীর্ষ আদালতের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন সমাজকর্মী মেধা পাটেকর।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর অন্যতম উপায় হল ভিড় ঠেকানো। কিন্তু দেশের অনেক রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জেলগুলিতে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি বন্দীরা রয়েছে। তাই জরুরিকালীন পরিস্থিতিতে অন্তর্বতী জামিন ও প্যারোলে বন্দীদের মুক্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বেশ কিছু রাজ্যে। মে মাসের ৮ তারিখে এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানার বেঞ্চ একটি নির্দেশিকা জারি করেছিল। বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রতিনিধিদের তৈরি বিশেষ একটি কমিটির কাছে শীর্ষ আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ ছিল, গ্রেফতার না করলেই হবে না, এমন ঘটনা ছাড়া বাকি ক্ষেত্রগুলি এড়িয়ে যেতে হবে।
কিন্তু এখানে একটা সমস্যার সৃষ্টি হয়। বন্দীদের মুক্তি দিতে গিয়ে দেখা যায়, কোনও কোনও বন্দীর বিরুদ্ধে এমন এক একটি মামলা রয়েছে, যা মুক্তির অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সেক্ষেত্রে জেলবন্দিদের মুক্তির শর্ত কী হতে পারে সে নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়। মেধা পাটকর তাঁর পিটিশনে বলেছেন, বন্দিদের বয়স, জেল খাটার সময়, অভিযোগের ধরন ও আরও নানা দিকে গুরুত্ব দিয়ে সঠিক গাইডলাইন তৈরি হলে প্রবীণ বন্দীদের এই সঙ্কটের সময় মুক্তি দিতে কোনও সমস্যা হবে না। উল্লেখ্য, বিহার, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশে এই প্রক্রিয়ায় প্রবীণ বন্দীদের মুক্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।