উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য অথবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দ্বারস্থ হতে চান বিজেপি সাংসদ জন বার্লা। শনিবার সাংবাদিকদের এমনটাই জানালেন তিনি। দলের রাজ্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে এ বিষয়ে বুঝিয়ে বলবেন বলেও জানিয়েছেন বিজেপি সাংসদ।
এদিন আলিপুরদুয়ার চৌপিথি এলাকায় নিজের সাংসদ কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন জন বার্লা। সেখান থেকে তিনি বুঝিয়ে বলেন, কেন উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণার দাবি করেছেন। তাঁর অভিযোগ, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা বিশেষ করে চিকেন নেক এলাকার দখল নিয়েছেন বাইরের বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গারা। তাঁরা রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড সব বানিয়েছেন বলে অভিযোগ। অথচ সাধারণ নাগরিক পরিষেবা থেকে স্থানীয়রা বঞ্চিত হচ্ছেন। সাংসদের কথায়, ‘এই এলাকার প্রচুর মানুষ নির্বাচনের পর ঘরছাড়া, বাড়ি ফিরতে তাদের ঘুষ দিতে হচ্ছে’। এর পরই জন বার্লা দাবি করেন, দেশের গুরুত্বপূর্ন এই ‘চিকেন নেক’ এলাকাকে সুরক্ষিত করতে হবে। আর এই সমস্ত কারণেই উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য অথবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণার দাবি তুলেছেন।
সাংসদ আরও সাফাই দিয়েছেন, এই দাবি আসলে সাধারণ নাগরিকদের। তিনি তা তুলে ধরেছেন মাত্র। এদিন তিনি উত্তরবঙ্গের কামতাপুরি আন্দোলন, গ্রেটার কোচবিহারের দাবি, ষষ্ঠ তফশিলি তালিকভুক্ত করার দাবির কথাও তুলে আনেন। সাংসদ জানিয়েছেন, এই সব দাবিদারদের কাউকে অসন্তুষ্ট করতে চান না তিনি। সেই কারণে সামগ্রিকভাবে উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য অথবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবি তুলেছেন। এবং তিনি এই দাবিতে এখনও অনড়।
বিজেপি সাংসদের এই দাবির বিষয় সামনে আসতেই কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার দলগতভাবে সেই দাবির পিছনে বিজেপির সঙ্গে সরাসরি কেএলও জঙ্গিগোষ্ঠীর যোগের জোরালো অভিযোগ তুলল তৃণমূল। তাদের বক্তব্য, যখন বিজেপি বিধায়ক ও সাংসদরা উত্তরবঙ্গকে বিচ্ছিন্ন করার দাবি তুলছে, ঠিক সে সময়েই কেএলও প্রধান জীবন সিং তাঁর গোপন ডেরায় বসে অস্ত্র উঁচিয়ে সেই দাবিই তুলছেন। এটা কাকতালীয় নয়। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় টুইটে বলেছেন, ‘কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপির বিষের অভাব নেই। গত মে মাসের ফলাফল থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত ছিল যে, বাংলায় এ জিনিস চলবে না’। দলের রাজ্যসভার মুখ্য সচেতক সুখেন্দুশেখর রায় বলেছেন, ‘বিজেপি নেতাদের পাশাপাশি কেএলও নেতার একই সময় একই দাবি! নেহাত কাকতালীয় নয়। এর সঙ্গে সুনির্দিষ্ট যোগাযোগ আছে বলেই আমরা সন্দেহ করছি’। জন বার্লার দাবি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘হিম্মত থাকলে বাংলা ভাগ করে দেখাক। দর বাড়ানোর জন্য সাংসদ এই সব করছেন। উত্তরবঙ্গকে অশান্ত করার চেষ্টা’।