রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের দিন নন্দীগ্রাম আসনে ভোটের ফলাফল ঘিরে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছিল। সেই ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করেই বৃহস্পতিবারই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সেই মামলা যেই বিচারপতির এজলাসে উঠেছে, তাঁকে নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। কারণ বিজেপির বৈঠকে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে এক মঞ্চে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তাই এবার নন্দীগ্রাম মামলা বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাস থেকে সরানোর আর্জি জানালেন আইনজীবী সঞ্জয় বসু। শুক্রবার এই মর্মে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলকে তিনি একটি চিঠি দেন। কারণ হিসাবে ওই চিঠিতে বিচারপতি চন্দের অতীত রাজনৈতিক যোগের কথা উল্লেখ করেছেন।
প্রসঙ্গত, ভোট গণনায় কারচুপির অভিযুক্ত তুলে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার বিচারপতি চন্দের বেঞ্চে ওঠে মামলাটি। সেখানেই শুনানির কথা ছিল। কিন্তু শুনানি হয়নি। এই ধরনের মামলায় অভিযোগকারীকে উপস্থিত থাকতে হয় বলে জানায় আদালত। আগামী বৃহস্পতিবার ওই একই বেঞ্চে মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়। তারই মধ্যে ওই মামলার বেঞ্চ বদলের দাবিতে শুক্রবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লেখেন সঞ্জয়। যিনি নন্দীগ্রাম মামলায় মুখ্যমন্ত্রীর তরফে আবেদনকারী। চিঠিতে সঞ্জয় জানান, বিচারপতি চন্দের সঙ্গে একটি রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক ছিল। ফলে তাঁর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। তাই মামলাটি অন্য বেঞ্চে সরানো হোক।
হাইকোর্টের ক্ষেত্রে যেহেতু প্রধান বিচারপতিই হচ্ছেন ‘মাস্টার অফ রোস্টার’। তাই তিনিই ঠিক করেন কোন মামলা কোন বিচারপতির বেঞ্চে উঠবে। নন্দীগ্রাম মামলার ক্ষেত্রে তিনি বিচারপতি চন্দকে বেছে নিয়েছেন। তাই মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী শুক্রবার প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখেছেন। তবে এই আর্জি প্রধান বিচারপতি গ্রহণ করেন কি না তা দেখার। অন্য দিকে, আইনজীবীদের একাংশ মনে করছে, এই ধরনের বিতর্কের সূত্রপাত হলে অনেক সময় বিচারপতি নিজেই মামলা থেকে সরে দাঁড়ান। এমন উদাহরণ অনেক রয়েছে। এ ক্ষেত্রেও প্রধান বিচারপতি যদি এই মামলা অন্য বেঞ্চে না পাঠান, তাহলে বিচারপতি চন্দের ওপরই নির্ভর করবে মামলার ভবিষ্যৎ।