মালদার ঘটনায় ক্রমশই সামনে আসছে একের পর এক তথ্য। বাড়ছে রহস্য। অভিযুক্ত মহম্মদ আসিফকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণে কালিয়াচকের পুরাতন ১৬ মাইল গ্রামের সেই বাড়িতে উপস্থিত হন তদন্তকারীরা। কীভাবে পরিবারের সদস্যদের খুন করা হয় তা নিয়ে বিস্তারিত জেরা করেন তাঁরা। আর তাতেই সামনে আস চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘুমের ওষুধ খাইয়ে প্রথমে পরিবারের সদস্যদের অচৈতন্য করে দেয় মহম্মদ আসিফ ওরফে আনান। এরপরই কি তবে জলের ট্যাঙ্কে ফেলে দেওয়া হয় দেহ?
তদন্তে নেমে মহম্মদ আসিফের মানসিক স্থিতি নিয়েও প্রশ্ন তুলছে পুলিশ। তাঁদের অনুমান, আসিফ মানসিক বিকারগ্রস্ত। জানা গিয়েছে, বাড়ির ভেতরেই একটি সুড়ঙ্গ তৈরি করেছিল আসিফ। সেখানেই দেহগুলি পুঁতে ঢালাই করে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। এমনটাই প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের। প্রতিবেশী সূত্রে খবর, নিহত গৃহকর্তা ইট, বালি, পাথরের ব্যবসা করতেন। ডাম্পারও ছিল তাঁদের। পরিবার যথেষ্ট বিত্তশালী ছিল বলেও মনে করছেন তদন্তকারীরা। স্থানীয়দের দাবি, অভিযুক্ত এলাকারই এক মিশন স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে পড়ত। প্রতিবেশীদের কারও সঙ্গে বিশেষ মিশত না। ঘরের মধ্যেই বেশিরভাগ সময় কাটাত সে। জানা গিয়েছে, প্লাইউড দিয়ে বেশ কয়েকটি কফিন তৈরি করেছিল অভিযুক্ত আসিফ। বাবা-মাকে ওই কফিনে বন্দি করে এক্সপেরিমেন্টও করেছিল সে। তাঁদের মুখে সেলোটেপ লাগিয়ে কফিনে ঢুকিয়েছিল আসিফ। এমনটাই জানা যাচ্ছে পুলিশ সূত্রে।
প্রসঙ্গত, ফেব্রুয়ারি মাসে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছিল বলে অনুমান তদন্তকারীদের। অভিযুক্তের দাদা মহম্মদ আরিফের অভিযোগের ভিত্তিতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্তের দাদার দাবি, গোটা ঘটনাটির সাক্ষী ছিলেন তিনি। তাঁকেও ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করেছিল ভাই। জীবন বাঁচাতে কলকাতায় পালিয়ে যান তিনি। দিনদু’য়েক আগে এলাকায় ফিরে বাবা, মা, বোন, দিদার উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনা জানতে পারে। তারপরই পুলিশকে গোটা বিষয়টি জানান তিনি। কিন্তু, কেন চারমাস পর্যন্ত তিনি মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন তা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। দফায় দফায় তাঁকেও জেরা করা হচ্ছে।
