ক্ষমতায় ফিরলেই কৃষক বন্ধু প্রকল্পে কৃষকদের ১০ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। যেমন কথা তেমন কাজ। ভোটে জেতার দেড় মাসের মধ্যেই এবার তাঁর প্রতিশ্রুতি পূরণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার কৃষক বন্ধু প্রকল্পের সূচনা করে তিনি জানালেন, ‘কৃষকদের পাশে থাকার অঙ্গীকার নিয়ে ৫ হাজার টাকা থেকে ভাতা বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। খেতমজুর, বর্গাদাররা ন্যূনতম ৪ হাজার টাকা পাবেন। আগে ২ হাজার টাকা পেতেন।’ একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মনে করিয়ে দিলেন, ‘এটা একটা বড় প্রকল্প। সারা ভারতে বাংলাই প্রথম।’
জানা গিয়েছে, কৃষক বন্ধু প্রকল্পে ৬২ লক্ষ উপভোক্তার কাছে পৌঁছে যাবে টাকা। বছরে দু’কিস্তিতে দেওয়া হবে ১০ হাজার টাকা। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘আজই ৯ লক্ষ ৭৮ হাজার কৃষক বন্ধু প্রকল্পে টাকা পেলেন কৃষকরা। আস্তে আস্তে বাকিরাও পেয়ে যাবেন।’ এদিন, কৃষক-কল্যাণে তাঁর সরকারের কাজের পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘কৃষক বন্ধু প্রকল্পে কৃষকের মৃত্যু হলে ২ লক্ষ টাকা দেয় সরকার। ২৮ হাজার কৃষক পরিবারকে মৃত্যুকালীন সুবিধা ৫৫৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। কৃষক বার্ধক্যভাতা ৭৫০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা করা হয়েছে। উপভোক্তার সংখ্যা ৬৬ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১ লক্ষ করা হয়েছে।’
তিনি জানান, ‘শস্য বিমার প্রিমিয়াম ৭০০ কোটি টাকা সরকার দেয়। ৬৪ লক্ষ কৃষককে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছিল। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসল নষ্ট হওয়ায় প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ কৃষক পরিবারকে ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা দিয়েছি। ১৮৬টি কিসান মান্ডি তৈরি হয়েছে। ৫০ লক্ষের বেশি সয়েল হেল্থ কার্ড। ১৬৫০টি কাস্টম হায়ারিং সেন্টার। নামমাত্র ভাড়ায় কৃষি যন্ত্রপাতি ভাড়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের ৬টি জেলায় ৫০ হাজার একর পতিত জমিকে কাজে লাগিয়েছ কৃষি, মাছচাষ ও পশুপালনের জন্য মাটিসৃষ্টি প্রকল্প চালু করেছি।’
এদিন কেন্দ্রকে বিঁধতে ছাড়েননি মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে অসংখ্য কৃষক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। ৬ মাস ধরে কৃষক আন্দোলন চলছে। কিন্তু বাংলা উজ্জ্বল ব্যতিক্রম।’ কিসান পিএম সম্মান নিধির চেয়ে কৃষক বন্ধু যে এগিয়ে, যুক্তি দিয়ে সে কথাও বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা। তাঁর দাবি, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পনায় খুব কম লোক পান। কেন্দ্রের পরিকল্পনায় ২ একর জমি থাকলে পাবে। আমরা সবাইকে দিই। কেন্দ্রের প্রকল্পে খেতমজুর, বর্গাদার নেই।’ বাংলায় কৃষকদের আয় ৩ গুণ বেড়েছে। এবার আরও বেশি হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।