তরুণ বয়সে পথভ্রষ্ট হয়ে নকশাল আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ভ্রম যখন ভাঙে তখন তাঁর মনে হয়, ‘সামাজিক সাম্যের লড়াইটা জরুরি।’ তখন থেকেই বন্দুক ছেড়ে রিকশা হাতে তুলে নিয়েছিলেন তিনি। দলিত অধিকার রক্ষায় লিখে ফেলেছেন একাধিক বইও। তাঁর লড়াকু ভাবমূর্তি দেখেই বলাগড়ে তাঁকে তৃণমূল প্রার্থী করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নাম ঘোষণা করতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘মাটির মানুষ। রান্না করেন, রিকশা টানেন, সাহিত্য চর্চাও করেন।’ ভোটে জিতে বিধায়ক হয়ে নেত্রীর মান রেখেছেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী। এবার নিজের টোটোয় চড়ে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবেন বলাগড়ের বিধায়ক। নতুন টোটোতে বসে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ‘আপনাদের বিধায়ক, আপনাদের সেবক। এতদিনে তাঁর আপনাদের আশীর্বাদে, দয়া আর দানে নিজের একটা বাহন হল। যে কোনও দিন তে কোনও সময় এই বাহন বিধায়ককে নিয়ে পৌঁছে যাবে আপনার দরজায়।’
প্রসঙ্গত, মহাশ্বেতা দেবীর হাত ধরে সাহিত্য জগতে উত্থান ঘটার পরে বাংলা সাহিত্যের জগতে এখন মনোরঞ্জনের নাম পরিচিতি পেয়েছে। নিজের দলিত জীবনের নানা পর্ব, বাধা, অনুসঙ্গ বারবার ফুটে বেরিয়েছে তাঁর লেখনিতে। বৃত্তের শেষ পর্ব, জিজীবিষার গল্প, অন্য ভুবন, ইতিবৃত্তে চণ্ডাল জীবন এমন ২১টি গ্রন্থের রচয়িতা মনোরঞ্জন তৃণমূলের টিকিটে ভোটে দাঁড়িয়েই বলেছিলেন, ‘আমি ফ্যাসিবাদ, পুরুষতান্ত্রিকতা, পুঁজিবাদ, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আজীবন লড়াই করেছি। দিদি আমাকে প্রার্থী করলেন। দিদি আমাকে প্রার্থী করলেন। আমাকে একটা প্ল্যাটফর্ম দিলেন। রাজক্ষমতার যদি অংশীদার হতে পারি তাহলে মানুষের দিকে তো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারব। মানুষের জন্য লড়াই করে কিছু নিয়ে আসতে তো পারব।’ এবার টোটো করে ঘরে ঘরে পৌঁছে যাওয়ার বার্তা দিয়ে আরও একবার যেন সেই কথাই স্পষ্ট করে দিলেন তৃণমূল বিধায়ক।