বাংলার রাজ্যপাল হয়ে আসার পর থেকে বারবারই রাজ্য সরকারের সঙ্গে সঙ্ঘাতে জড়িয়েছেন তিনি। এই করোনা পরিস্থিতিতেও বারবার রাজ্যের নানা সিদ্ধান্তে মুখ খুলে বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন। এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া তাঁর চিঠি টুইটারে প্রচার করায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের বিরুদ্ধে সরব হল নবান্ন। রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়ায় স্পষ্টতই জানাল, রাজ্যপাল মনগড়া কথা লিখেছেন চিঠিতে। তা আবার প্রচারের জন্য টুইট করেছেন। ‘প্রথাগত শিষ্টাচারের এহেন অবমাননায়’ সরকার রীতিমতো স্তম্ভিত।
প্রসঙ্গত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শপথ বাক্য পাঠ করানোর পর মুহূর্ত থেকেই রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা নিয়ে সরব রাজ্যপাল। তারপর থেকে তা লাগাতার করে চলেছেন। এরই মধ্যে সোমবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি। তারপর মঙ্গলবার দিল্লী গিয়েছেন রাজ্যপাল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে তাঁর দেখা করার কথা। সেখানে থেকেই মুখ্যমন্ত্রীকে একটি চিঠি লিখেছেন ধনকর। যে চিঠির প্রতিপাদ্য বেশ কঠোর এবং কড়া।
রাজ্যপাল লিখেছেন, ‘আমি গভীর ভারাক্রান্ত হৃদয়ে রাজ্যে ভোট পরবর্তী রক্তাক্ত হিংসা নিয়ে আপনার অনবরত নীরবতা প্রত্যক্ষ করছি। স্বাধীনতার পর থেকে আর এমনটা দেখা যায়নি।’ এরপরই আসরে নামে নবান্ন। রাতেই টুইট করে ধনকরকে পাল্টা দিয়ে স্বরাষ্ট্র দফতর বলে, মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের মধ্যে যে মতামত বিনিময় তা এভাবে প্রকাশ করে দেওয়া প্রথাগত শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না। দ্বিতীয়ত, রাজ্যপাল যে সব কথা বলেছেন তা ঠিক নয়। অনেক কিছুই মনগড়া। এমন ভিত্তিহীন কথা যে রকম এক তরফা তিনি বলে যাচ্ছেন তাতে সরকার স্তম্ভিত।
স্বরাষ্ট্র দফতরের এও বক্তব্য, ভোটের সময়ে যখন নির্বাচন কমিশন সামগ্রিক ভাবে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে ছিল তখনও রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা ঘটেছে। তা এড়ানো যায়নি। ভোটের পর সরকার গঠিত হয়েছে। বর্তমান সরকার কঠোর ভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছে। রাজ্য পুলিশকে কঠোর ভাবে বলা হয়েছে যে অসামাজিক কার্যকলাপ শক্ত হাতে দমন করতে হবে। সমাজে আইনের শাসন ও পরিবেশ কায়েম রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর। উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনেই রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর রয়েছে। অর্থাৎ একে মুখ্যমন্ত্রীর জবাব বলেও দেখা যেতে পারে।