এবার ফের সামনে এল বিজেপির প্রতিহিংসার রাজনীতি। গত রবিবারই আম আদমি পার্টি ও আরও কয়েকটি বিরোধী দল অভিযোগ করেছিল, অযোধ্যায় জমি কেনার সময় বড় ধরণের কেলেঙ্কারিতে জড়িয়েছে শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট। এরপরই তার খেসারত দিতে হল আপকে। মঙ্গলবার আপ সাংসদ সঞ্জয় সিং অভিযোগ করেছেন, দুর্নীতির অভিযোগ তোলার জন্য তাঁর বাড়িতে হামলা করেছিল বিজেপির সমর্থকরা। আপ সূত্রে খবর, দিল্লীর নর্থ অ্যাভিনিউ অঞ্চলে অতি সুরক্ষিত এলাকায় বসবাস করেন সঞ্জয় সিং। দুই ব্যক্তি জোর করে তাঁর বাড়িতে ঢুকতে চেষ্টা করেছিল। পরে তাঁরা সাংসদের নেমপ্লেটের ওপরে কালি লাগিয়ে দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাংসদ নিজেও টুইটারে লিখেছেন, ‘আমার বাড়িতে হামলা হয়েছিল। আমি বিজেপি কর্মীদের উদ্দেশে বলতে চাই, তোমরা যতই গুন্ডামি কর, রামমন্দির নির্মাণের জন্য যে অর্থ সংগৃহীত হয়েছে, তা চুরি করতে দেব না। তার জন্য যদি মরতে হয় মরব।’
প্রসঙ্গত, সমাজবাদী পার্টি ও আপ দু’টি আলাদা সাংবাদিক বৈঠকে অভিযোগ করেছিল, দুই রিয়েল এস্টেট ডিলার ২ কোটি টাকা দিয়ে একটি সম্পত্তি কিনে কয়েক কয়েক মিনিটের মধ্যে তা ট্রাস্টকে বিক্রি করেছে ১৮.৫ কোটি টাকায়। পরে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা সুপ্রিম কোর্টের কাছে আর্জি জানান, তারাই ওই ‘বিরাট কেলেঙ্কারি’-র তদন্ত করুক। কারণ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ওই ট্রাস্ট তৈরি হয়েছিল। ট্রাস্ট যে পরিমাণ অর্থ অনুদান হিসাবে পেয়েছে, তাও অডিট করার অনুরোধ করা হয় সুপ্রিম কোর্টকে। এরপরই সোমবার গভীর রাতে টুইটে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা তথা শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্রের সম্পাদক চম্পত রাই বলেন, যাবতীয় টাকার লেনদেন স্বচ্ছতার সঙ্গে করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী সকলের প্রাপ্য টাকা সরাসরি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।
চম্পত রাই টুইট করে বলেছেন, রামমন্দির চত্বরের প্রাচীরের আশপাশে অপর যে মন্দিরগুলি আছে, তা ট্রাস্ট অধিগ্রহণ করছে। এর ফলে যদি কারো বাড়ি ভাঙা পড়ে, তাঁকে পুনর্বাসন দেওয়া হবে। সেজন্যই ট্রাস্ট ১২ হাজার ৮০ বর্গমিটার আয়তনের ওই জমি কিনেছিল। জমিটি অযোধ্যা রেলস্টেশনে যাওয়ার রাস্তার ধারে অবস্থিত। শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্রের সম্পাদক এ-ও জানিয়েছেন, যে দুই রিয়েল এস্টেট ডিলারের থেকে জমিটি কেনা হয়েছে, তাঁরা ২০১১, ২০১৭ ও ২০১৯ সালে জমির আসল মালিকদের সঙ্গে চুক্তি করেন। ট্রাস্ট খোঁজ নিয়ে দেখেছে, রিয়েল এস্টেট ডিলাররা ওই জমির প্রতি বর্গফুটের দাম দিয়েছেন ১৪২৩ টাকা। তা বাজারদরের চেয়ে অনেক কম। তবে এ নিয়ে বিতর্ক চলছেই। উল্লেখ্য, আগামী বছরেই উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোট। পর্যবেক্ষকদের মতে, তার আগে মন্দির নির্মাণ নিয়ে কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠা রাজনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ।