প্রথমার্ধে খেলা চলাকালীন গোলপোস্টের নীচে বিপক্ষের গোলরক্ষককে একা পেয়েও মাত্র কয়েক হাত দূর থেকে গোল করার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেছেন! কিন্তু তিনি যে আক্ষরিক অর্থে যোদ্ধা। তাই তো একবার সুযোগ হাতছাড়া করলেও ফের জ্বলে ওঠেন। ঠিক যেন ক্ষুধার্থ বাঘের মতো। দ্বিতীয়ার্ধের একদম শেষের দিকে মোক্ষম সময়ে রক্তের স্বাদ পেয়েছিলেন ক্ষুধার্ত-হিংস্র পর্তুগিজ অধিনায়ক। তাঁর প্রথম গোলটি এল পেনাল্টি থেকে। তার কিছুক্ষণ পরেই গোলরক্ষককে ডান দিক-বাঁ দিক কাটিয়ে মাটিতে ফেলে দ্বিতীয় গোল এল তাঁর পা থেকে।
গতকাল পর্তুগালের জয় সহজে আসেনি মোটেই। ৮৩ মিনিট পর্যন্ত খেলা ছিল গোলশূন্য। এরপর ভাগ্যের জোরে পর্তুগালের এগিয়ে যাওয়া! গোলের জন্য অ্যাসিস্ট ডিফ্লেকশন থেকে রাফায়েলের গোলটাও এল সেই ডিফ্লেকশন থেকেই। তারপরেই শেষ মুহূর্তে জ্বলে উঠলেন এই মহা তারকা। দারুণ ফুটবল খেলে ফিফা তালিকার পাঁচ নম্বরে থাকা পর্তুগালকে চাপে রাখা হাঙ্গেরি হঠাৎ রোনাল্ডোর আগুনে ঝলসে গেল! শেষ অবধি খেলার ফলাফল হলো, পর্তুগাল ৩ ও হাঙ্গেরি ০।
বিশ্বের প্রথম ফুটবলার হিসেবে এই নিয়ে পঞ্চম ইউরো কাপ খেললেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। টপকে গেলেন লোথার ম্যাথাউজ, লুকাস পোদোলস্কির মতো একাধিক তারকা ফুটবলারকে। ২০০৪ সালে প্রথম বার ইউরো কাপে খেলেন রোনাল্ডো। আর এবার মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গেই রেকর্ড রোনাল্ডোর দখলে। ২০০৪, ২০০৮, ২০১২ এবং ২০১৬ পর পর চারটে ইউরো খেলেছিলেন তিনি। জিতেছেন ২০১৬ সালে। সে বার দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। তাঁর খেলা প্রতিটি ইউরোতেই গোল পেয়েছেন রোনাল্ডো। অন্যথা হল না এ বারেও।
ইউরোতে সব চেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডও তাঁরই দখলে। এখনও অবধি ২১টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন জার্মানির বাস্তিয়ান সোয়েনস্টাইগার। তিনি খেলেছিলেন ১৮টি ম্যাচ। এর পাশাপাশি গতকাল হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে নতুন রেকর্ডও গড়লেন সি আর সেভেন। জোড়া গোলের পর এখন আন্তর্জাতিক মঞ্চে রোনাল্ডোর গোল সংখ্যা দাঁড়ালো ১০৬টি। তাঁর সামনে ইরানের প্রাক্তন স্ট্রাইকার আলি দায়ির। তাঁর সংগ্রহে ১০৯টি গোল। এ বারের ইউরোতেই সেই সংখ্যাও টপকে যেতে পারেন পর্তুগিজ তারকা। আপাতত পর্তুগালের সাফল্যের পাশাপাশি সেই দিকেও তাকিয়ে রয়েছেন রোনাল্ডো-ভক্তরা।