শুধু সাধারণ মানুষ নয়, দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের একাংশ থেকেও দাবি তোলা হচ্ছিল যে, এবার মুখ্য প্রশাসকের পদ থেকে শংকর আঢ্যকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হোক। সেই দাবি মেনেই আজ বনগাঁ পুরসভায় বড়সড় রদবদল ঘটল। মুখ্য প্রশাসকের পদ থেকে সরলেন শংকর আঢ্য। তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠকে আনা হল এই দায়িত্বে। বিধানসভা ভোটে বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রে তৃণমূলের ভরাডুবির পর থেকে পুর প্রশাসককে সরানোর দাবি ক্রমশই জোরদার হয়েছিল।
মঙ্গলবার রাজ্য পুর দফতরের পক্ষ থেকে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে, বনগাঁর পৌর প্রশাসক পদে রদবদল করা হচ্ছে। মুখ্য প্রশাসক পদের ভার দেওয়া হচ্ছে গোপাল শেঠকে। তাঁকে অতি শীঘ্রই দায়িত্বভার গ্রহণ করে কাজ শুরুর নির্দেশ দিয়েছে পুর দফতর। বনগাঁ পুরসভার প্রশাসক বদল নিয়ে অনেকদিন ধরেই রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছিল, তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হবে। এতদিন বাদে সেই প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হলো। নতুন দায়িত্ব পেয়ে বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ বলেন, “দল আমাকে মনে করেছে, দায়িত্ব দিয়েছে। আমাকে দলের পক্ষ থেকে যে দায়িত্ব দেওয়া হবে, সেই দায়িত্বই পালন করব।”
২০১৫ সালে পৌর নির্বাচনে বনগাঁর ২২ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২o তৃণমূল জয়লাভ করে৷ ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী হয়ে চেয়ারম্যান হয়েছিলেন শংকরবাবু। বনগাঁ তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত হলেও ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচন থেকেই হাওয়া বদলাতে শুরু করে। বনগাঁ পৌরসভা এলাকায় বিজেপি থেকে ভোটের নিরিখে প্রায় ১৮ হাজার ভোটে পিছিয়ে যায় তৃণমূল। এরপরেই বনগাঁ পৌরসভার ১৪ জন জন কাউন্সিলর শংকর আঢ্যর বিরুদ্ধে স্বৈরাচার ও স্বজনপোষণের অভিযোগ এনে অনাস্থা এনেছিল।
বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস তৃণমূল জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের কাছে শংকর বাবুকে সরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন। পরে কয়েকজন কাউন্সিলর তৃণমূলে ফিরে আসায় ধ্বনি ভোটে জয়লাভ করেন শংকরবাবু। এরপর একুশের বিধানসভা নির্বাচনেও বনগাঁ পৌর এলাকায় তৃণমূল ভাল ফল না করায় প্রশাসক বদলের গুঞ্জন বেড়ে যায়। এদিন প্রশাসক বদলের খবর পেয়ে উচ্ছ্বসিত তৃণমূলের একাংশ ও প্রাক্তন কাউন্সিলররা। তাঁদের বক্তব্য, তৃণমূল শংকর আঢ্যকে সরিয়ে দিল, কিন্তু তা অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। বিধানসভার আগে তাঁকে সরানো হলে বনগাঁয় আরও ভাল ফল করতে পারত তৃণমূল।