তিনি কামারহাটির বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা। একদা রাজ্যের মন্ত্রীও ছিলেন। এবার জামাই ষষ্ঠীর প্রাক্কালে ঘটা করে তিনি নিজের বাড়িতে বউমা ষষ্ঠী পালন করলেন। তবে একটু অন্য ভাবে। ইদানিং একটা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, যদি জামাই ষষ্ঠী হয়, তাহলে বউমা ষষ্ঠী নেই কেন? সম্প্রতি অনেক বাড়িতে বউমা ষষ্ঠীর রেওয়াজও শুরু হয়েছে। এবার সেই পথেই পা বাড়ালেন মদন মিত্র।
এদিন বউমা ষষ্ঠী পালন করার পর মদন মিত্র বলেন, “কামারহাটিতেই পড়ে থাকি, ঘরে আগুন না লাগলে পরিবারের জন্য সময়ে দেওয়াই হত না।” প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই মদন মিত্রের ভবানীপুরের বাড়িতে আগুন লেগেছিল। আর পরিবারের সঙ্গে না থাকার মতো আক্ষেপ মাঝে মাঝেই শোনা যায় তাঁর মুখ থেকে। সেটা মিথ্যাও নয়। ভবানীপুরের থেকে কামারহাটিতেই তাঁর দেখা মেলে বেশি। তবে বউমার আবদারে এদিন বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটালেন সবার সঙ্গে।
উল্লেখ্য, পালকি করে বৌমাকে এনেছিলেন শ্বশুরমশাই মদন মিত্র। আর শ্বশুর জেলে থাকাকালীন শাশুড়ির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কোমর বেঁধে তাঁর জন্য ভোট প্রচারে নেমেছিলেন বৌমা স্বাতী মিত্রই। তখন নাতি লোলোও খুব ছোট। সে কী সব দিন গিয়েছে! এখন অনেকটাই বড় হয়ে গিয়েছে নাতি। পরিষ্কার উচ্চারণে দাদুর বিখ্যাত ‘ওহ্ লাভলি’ গান সেও গাইতে পারে। আর নবনির্বাচিত বিধায়কের পুত্রবধূ শ্বশুর মশাইকে দেখেই মানুষের সেবায় কাজ করছেন।
তাঁর স্কুল নব নালন্দার প্রাক্তনীদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা, কমিউনিটি কিচেন হোক কিংবা ত্রাণ নিয়ে উপকূলবর্তী অঞ্চলে ছুটে যাওয়া, সবকিছুই করছেন। এহেন ‘দশভূজা’ বউমা জামাই ষষ্ঠীর আগে যদি শ্বশুরের কাছে আবদার করেন তাঁর স্কুলে আয়োজন করা রক্তদান শিবিরে থাকতে হবে, তবে তিনি কী করে আর না করতে পারেন। তাই জামাই ষষ্ঠীর আগে বউমার আবদার মেটাতে নব নালন্দা স্কুলে হাজির মদন মিত্র। চোখে পরিচিত রোদচশমা। পরনে পাঞ্জাবি।
তাঁর কথায়, “করোনা হয়েছিল তাই নেহাত রক্তটা দিতে পারছি না। কিন্তু নব নালন্দার প্রাক্তনীরা যা করছে একটাই কথা বলবো, ওহ্ লাভলি।” ‘ব্র্যান্ড এমএম’ হাসিমুখে বললেন শ্বশুরমশাই মদন মিত্র। অন্যদিকে বৌমা স্বাতী মিত্র জানাচ্ছেন, “বাবা এসে দাঁড়িয়েছেন আমাদের পাশে, এটাই অনেক বড় উপহার। তাছাড়া অনুমতি থাকলেও আমি রক্ত দিতে দিতাম না। কারণ, বাবা এখনও বেশ দুর্বল।”