বিধানসভা ভোটে ভরাডুবির পর একদিকে যখন গেরুয়া শিবিরের মধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে দোষারোপের পালা, বারবারই সামনে এসে পড়ছে নেতৃত্বের মধ্যে কলহ। তখন অন্যদিকে ভাঙন অব্যাহত দলে। এর মধ্যে গতকালই সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা খেয়েছে পদ্মশিবির। দলত্যাগ করে সপুত্র তৃণমূলে ফিরেছেন খোদ বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়। আর মুকুলের ‘ঘর ওয়াপসি’র পরই এবার রাজ্য বিজেপির একাধিক নেতা তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। ইতিমধ্যেই বীরভূমের দুই প্রাক্তন বিধায়ক মনিরুল ইসলাম এবং গদাধর হাজরা তৃণমূলে ফেরার জন্য দলীয় স্তরে যোগাযোগ শুরু করেছেন। একইভাবে বীরভূমে বিজেপির জেলা কমিটি এবং রাজ্য কমিটির সদস্যদের অনেকেই তৃণমূলে ফিরতে চাইছেন।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার মুকুল রায় এবং শুভ্রাংশু রায় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরেছেন। আর এই বিষয়টি সামনে আসতেই বীরভূমের মুকুল অনুগামীরা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলের ফেরার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছেন মনিরুল ইসলাম, তাঁর ছেলে আসিফ ইকবাল, গদাধর হাজরা এবং বিদ্যুৎ চট্টোপাধ্যায়-সহ একাধিক বিজেপি নেতা। গত লোকসভা ভোটের পর মুকুল রায়ের হাত ধরে সরাসরি দিল্লী গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন মনিরুল ইসলাম এবং তাঁর ছেলে আসিফ ইকবাল, গদাধর হাজরা। যা নিয়ে রাজ্য বিজেপিতে চূড়ান্ত বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। অভিযোগ উঠেছিল রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকে না জানিয়ে এই যোগদান। তারপর থেকেই বিজেপিতে কোণঠাসা মনিরুল এবং গদাধর। অসিফ ইকবালকে অবশ্য রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার স্থায়ী সদস্য করা হয়েছিল।
তবে ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি থেকে নানুর বিধানসভায় গদাধর হাজরা এবং লাভপুর বিধানসভায় মনিরুল ইসলাম তাঁর ছেলে আসিফ ইকবালের জন্য টিকিট চেয়ে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু বিজেপি তাঁদের টিকিট দেয়নি। তারপরেই মনিরুল ইসলাম নির্দল প্রার্থী হিসাবে লাভপুর কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এবার মুকুল রায় তৃণমূলে ফেরা মাত্রই তাঁরাও ফের দলবদলের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। বীরভূমে যাঁরা বিজেপি থেকে তৃণমূল ফিরতে চান তাঁরা অনুব্রত মণ্ডলের হাত ধরে ফিরতে চান। এখন দেখার তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব এবং বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল কাদের দলে ফেরাতে চান। এই বিষয়ে গদাধর হাজরা জানিয়েছেন, ‘মুকুল রায় ফিরেছেন এটা ভাল খবর। আমার নেতা অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর হাত ধরেই ফের তৃণমূলে ফিরতে চাই।’