বিজেপিতে যোগ দান ইস্তক দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বনিবনা হয়নি তাঁর। বিধানসভা ভোটের পর থেকেই ক্রমশ দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছিলেন তিনি। অবশেষে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিজেপি ছেড়ে ‘ঘর ওয়াপসি’ করতে চলেছেন মুকুল রায়। অন্তত তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রের তেমনই দাবি। শেষমুহূর্তে কোনও নাটকীয় পট পরিবর্তন না ঘটলে শুক্রবারেই সপুত্র তৃণমূল ভবনে যাচ্ছেন মুকুল। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের প্রথম সারির নেতাদের উপস্থিতিতে মুকুল এবং শুভ্রাংশুর রায়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথা।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার পুত্র শুভ্রাংশু -সহ ঘনিষ্ঠদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন মুকুল। সেখানেই তাঁর সিদ্ধান্ত এবং ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি। প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন ধরেই মুকুল বিজেপি-র থেকে দূরত্ব বাড়াচ্ছিলেন। দলের বৈঠকেও যাননি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন বটে। কিন্তু তা-ও খানিকটা অনীহা নিয়েই। ভোটের আগে এবং পরে তাঁকে কোনও সাংগঠনিক ভূমিকায় সে ভাবে দেখাও যায়নি। বিধায়ক হয়েছেন বটে। কিন্তু শপথ নেওয়া ছাড়া অন্য কোনও ভূমিকায় তাঁকে দেখা যায়নি। বরং স্ত্রীর অসুস্থতা নিয়ে তাঁর সঙ্গে বিজেপির দূরত্ব বাড়ছিল। উল্টো ছবি দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের ক্ষেত্রে। মমতা ভোটের আগে থেকে মুকুল সম্পর্কে প্রকাশ্যেই সহানুভূতিশীল থেকেছেন। মুকুলও প্রচারে নেমে মমতা-বিরোধী একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি।
মুকুল বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে এলে সাম্প্রতিক কালে সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বার্তা দিতে পারবে তৃণমূল। কারণ, তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে ওজনদার নেতাদের যাওয়া শুরু হয়েছিল মুকুলকে দিয়েই। তাঁর পর একে একে জোড়াফুল থেকে পদ্মফুলে নাম লিখিয়েছিলেন অর্জুন সিংহ, সব্যসাচী দত্ত, শোভন চট্টোপাধ্যায়রা। আর ভোটের আগে শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। মুকুল তৃণমূলে ফিরে এলে তাঁদের কাছেও একটা বার্তা যাবে। যেমন রাজনীতিক মহলে জোরাল সঙ্কেত দেওয়া যাবে এই মর্মে যে, তৃণমূল থেকে গিয়ে বিজেপির সঙ্গে ঘর করা যায় না।
