এর আগের পুরসভার কাউন্সিলর থাকার সময় নিজের ওয়ার্ড নানা ধরনের গাছ দিয়ে সাজিয়েছিলেন তিনি। আর এবার শিলিগুড়ির নতুন পুরপ্রশাসকের দায়িত্ব পেয়েই শহরে দশ লক্ষ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেব। বৈকুণ্ঠপুর, মহানন্দা বনাঞ্চল দিয়ে ঘেরা হলেও শহর শিলিগুড়িতে বর্তমানে গাছের সংখ্যা কম। জলপাইগুড়ি জেলার অন্তর্গত সংযোজিত ওয়ার্ডগুলিতে যাও বা কিছু গাছ রয়েছে, শিলিগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের ৩৩টি ওয়ার্ডে তেমন গাছই নেই। ব্যতিক্রম শিলিগুড়ির কলেজ পাড়া। এই ওয়ার্ডের বাসিন্দা গৌতম দেব।
উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সালে প্রথম কাউন্সিলর হওয়ার পরে বনমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজের ওয়ার্ড গাছ দিয়ে মুড়ে দিয়েছিলেন তিনি। প্রতিদিন সকালে নিজেই সেই সমস্ত গাছের পরিচর্যা করতেন। এখন তার ফল হাতেনাতে পাচ্ছেন। শিলিগুড়ি শহরের সবচেয়ে সবুজে ভরা ওয়ার্ড এটি। শীতে নানা পরিযায়ী পাখিও সকালে এখানে দেখতে পাওয়া যায়। গাছ ও পাখির টানে গোটা শহর থেকে প্রবীণেরা এই ওয়ার্ডে প্রাতঃভ্রমণে আসেন। এ বার শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান পদে মনোনীত হওয়ার পরে সমগ্র শিলিগুড়ি শহরটিকে গাছ দিয়ে সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন গৌতমবাবু। এদিন তিনি জানান, “গাছ না-থাকলে সেই শহরকে কী মানুষের জন্য বসবাসযোগ্য বলা যায়? শিলিগুড়ি শহরে গাছের বড়ই অভাব। সেই অভাব পূরণেই দশ লক্ষ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এত গাছ এক বছরে রোপণ করা সম্ভব নয়। সবচেয়ে বড় কথা, গাছ রোপণ করলেই হয় না, সেটাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। তাই ধাপে ধাপে এই কাজটি করা হবে।”
ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে বন দপ্তরের পার্কস অ্যান্ড গার্ডেন বিভাগের সঙ্গে কথা বলেছেন গৌতমবাবু। জুন-জুলাই মাস গাছ লাগানোর মরসুম। বন দপ্তর ওই সময়ে রাজ্য জুড়ে বৃক্ষরোপণ উৎসবের আয়োজনও করে থাকে। সেই সময়ে শিলিগুড়ি শহরেও গাছ লাগাবে পুরসভা। সবচেয়ে বেশি গাছ লাগানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে চলা মহানন্দা নদীর দুই পাড়ে। সংস্কারের অভাবে বিপর্যস্ত মহানন্দাকে সংস্কারের জন্য রাজ্য সরকার নানা ভাবে চেষ্টা করছে। নদীর দুই পাড়ে বাঁধ দিয়ে ভাঙন রোধের ব্যবস্থা হয়েছে। এ বার গাছ লাগিয়ে নদীর দু’পাশে শোভা বাড়ানো হবে। সেই সঙ্গে শহরের স্কুল, কলেজ, সরকারি জমি ও রাস্তার দুই পাশেই গাছ লাগানো হবে। প্রাক্তন মন্ত্রী জানান, “হিলকার্ট রোড, সেবক রোড ও বিধান রোডে রাস্তার পাশে গাছ রয়েছে। কিন্তু অন্যান্য রাস্তাগুলিতেও গাছ লাগানো সম্ভব।” গাছের মধ্যে ফুল ও ফলের গাছই প্রাধান্য পাবে। পার্কস অ্যান্ড গার্ডেনস বিভাগের উত্তরবঙ্গের ডিএফও অঞ্জন গুহ বলেন, “শিলিগুড়ির পুরপ্রশাসকের সঙ্গে এখনও এই বিষয়ে আলোচনা হয়নি। তবে পুরসভার নির্দেশ পেলে আমরা অবশ্যই গাছ লাগানোর কাজে সমস্ত রকম ভাবে সাহায্য করব।”