কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে বিধায়ক হয়েছেন তিনি। কিন্তু এরপর থেকেই তাঁর হাবভাব একেবারে ভাল ঠেকছে না। গেরুয়া শিবিরের অন্দরেই এই নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে জোর গুঞ্জন। কখনও বিধানসভা ভবনে গিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ, কখনও আবার সরাসরি দিলীপ ঘোষকে চ্যালেঞ্জ করে প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া। অন্যদিকে তাঁর অসুস্থ স্ত্রীকে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখতে যাওয়ার পরে শুভাংশুর প্রশংসা। সব মিলিয়েই এতদিন ধরে একটা কঠিন অঙ্ক কষা চলছিল পদ্ম শিবিরে।
এবার সূত্র মারফত দলের অন্দরে খবর এসেছে, তলে তলে অনুগামীদের নিয়ে প্রতিনিয়ত বৈঠক করছেন মুকুল রায়। অথচ মঙ্গলবারই দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বাধীন রাজ্যের সাংগঠনিক বৈঠকে হাজির ছিলেন না তিনি। তাহলে কি দলত্যাগ শুধু সময়ের অপেক্ষা? অন্দরের খবর, আচমকাই বিজেপিকে ধাক্কা দিয়ে অনুগামীদের নিয়ে তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন মুকুল রায়। যদিও এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন সকলেই।
এর আগেও যখন জল্পনা উঠেছিল, মুকুল রায় সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি বিজেপিতে আছেন। কিন্তু তার ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, বিজেপিতে নাকি কোনওদিনই মানিয়ে নিতে পারেননি তিনি। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর যে বনিবনা নেই, তা এতদিন চাপা থাকলেও আজ আর জানতে বাকি নেই কারও। আবার শোনা যাচ্ছে, মুকুলেরই হাত ধরে বিজেপিতে আসা বেশ কয়েকজনের গুরুত্ব কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। সে তুলনায় মুকুল রায়কে দক্ষ সংগঠকের সম্মানটুকুও দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। অন্যদিকে ভোটের প্রচারে জনসমক্ষে মুকুল রায়ের প্রশংসা শোনা গিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মূলত তাঁর কারিশমাতেই রাজ্যে ১৮টি আসন পেয়েছিল বিজেপি, এ কথা তলে তলে স্বীকার করেন অনেক বড় বিজেপি নেতাও। যেই কারণে রাজ্য থেকে সরিয়ে মুকুলকে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি পদে নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও সেটা অনেক দেরিই হয়ে গিয়েছিল বলে একটা চাপা ক্ষোভ না কি রয়েই গিয়েছে মুকুলের। তারপর বিধানসভা নির্বাচনে একটি আসনে প্রার্থী করে রাজ্যের অন্যান্য জেলাতে সংগঠক হিসেবে তাঁকে আসলে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়েছিল বলেই অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের সৌজন্য না কি নজর কেড়েছে এই বিজেপি নেতার। তাই তিনি ফের তৃণমূলেই ফিরতে চলেছেন বলে খবর গেরুয়া শিবিরের অন্দরেই।