‘শোন, আজকে দিলীপদা ৪টের সময় আসছে। তোর তো অনেক বক্তব্য আছে। যারা তোর ফলোয়ার আছে, কিছু লোক নিয়ে চলে যাবি। দিলীপদার সামনেই বিক্ষোভটা হোক’। গত ৪ জুন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে ঘিরে বিজেপি কর্মীদের বিক্ষোভ প্রদর্শনের প্রেক্ষিতে এমনই এক অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে। যা নিয়ে তীব্র শোরগোল শুরু হয়েছে রাজ্য বিজেপির অন্দরে। সন্দেহ করা হচ্ছে দিলীপ ঘোষকে ঘিরে এই বিক্ষোভে মদত দেন যিনি, তিনি বিরোধী দলের কেউ নন। তিনি হুগলির বিজেপি নেতা সুবীর নাগ! অন্তত অডিও ক্লিপের কণ্ঠ সেটাই সন্দেহ করা হচ্ছে।
এখন প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি বিজেপির নেতাই তাঁদের রাজ্য সভাপতির সামনে বিক্ষোভের ছক কষেছিলেন? সেই পরিকল্পনায় ইন্ধন জুগিয়েছিলেন দলেরই কোনও নেতা? এমনই অভিযোগ উঠল সংশ্লিষ্ট অডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার পর। যদিও সেই অডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাই করে দেখেনি ‘এখন খবর’।
বিধানসভা নির্বাচনে হারের পর গত ৪ জুন হুগলিতে যান দিলীপ ঘোষ। চুঁচুড়ায় জেলা কার্যালয়ে বৈঠক করেন দলীয় নেতাদের সঙ্গে। সেখানেই তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা। দলের বর্তমান হুগলী জেলা (সাংগঠনিক) সভাপতি গৌতম চট্টোপাধ্যায় এবং রাজ্য সম্পাদক দীপাঞ্জন গুহকে অপসারণের দাবিতে দিলীপবাবুকে ঘিরে শুরু হয় বিক্ষোভ। এমনকি প্রার্থী নির্বাচন নিয়েও মন্তব্য করতে শোনা যায় বিজেপি কর্মীদের। প্রথমে এই বিক্ষোভের জন্য তৃণমূলের দিকে আঙুল তোলে গেরুয়া শিবির। কিন্তু এই অডিও ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার পর অন্য মাত্রা পেল এই বিতর্ক। এখন যে সুবীর নাগের কণ্ঠস্বর শোনা গিয়েছে বলে দাবি করেছে বিজেপির একাংশ, তিনি কে?
বিজেপি নেতা সুবীর নাগ হুগলী জেলার প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি তথা রাজ্য কমিটির সদস্য এবং কাটোয়ার অবজার্ভার। যদিও বিধানসভা নির্বাচনে দল তাঁকে টিকিট না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ সুবীর রাজনৈতিক সন্ন্যাস নেওয়ার কথা বলেছিলেন। এখন দলের বর্তমান সভাপতি গৌতম চ্যাটার্জি ও রাজ্য সম্পাদক দীপাঞ্জন গুহকে অপসারণের দাবিতে দিলীপ ঘোষের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শনের জন্য এক বিজেপি নেতাকে নির্দেশ দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ওই মোবাইল কথপোকথনে সুবীর নামে এক বিজেপি কর্মিকে দিলীপ ঘোষের সামনে বিক্ষোভ করতে নির্দেশ দিচ্ছে শোনা যায়। কেন হার হল কেন যাকে তাকে প্রার্থী করা হল, কেন এতদিন দিলীপবাবু আসেননি, এসবের জবাবদিহি চাইতেও বিজেপি কর্মীকে ইন্ধন দিতে শোনা যায় একজনকে। যিনি সুবীর নাগ বলেই দাবি করছে বিজেপির একাংশ।
যদিও অভিযুক্ত সুবীর নাগ যদিও দাবি করেন, তাঁর গলা নকল করে এটা করা হয়েছে। যার সঙ্গে কথা বলতে শোনা গেছে সেই কর্মী বিষ্ণু চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন। দলেরই একাংশ তাঁকে বদনাম করতে এই কাণ্ড করেছে বলে মনে করেন সুবীরবাবু। এদিকে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব এই অডিও ক্লিপটির সত্যাসত্য পরীক্ষা করতে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে বলে খবর।