দিল্লী থেকে টাকা এসেছিল। কিন্তু সেই টাকা আর শেষ পর্যন্ত পৌঁছয়নি বুথস্তরের নেতাদের হাতে। কারণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনী সভার গাড়ি ভাড়ার জন্য বরাদ্দ সেই টাকা ‘লোপাট’ হয়ে গিয়েছে! আর এর ফলে বকেয়া মেটাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় পুরুলিয়ার মানবাজারের বিজেপির বুথ সভাপতিদের একাংশকে। পরে বিধানসভা নির্বাচনের বুথ খরচের টাকা থেকে তাঁরা বকেয়া গাড়ি ভাড়া মেটাতে বাধ্য হন বলে অভিযোগ। মানবাজারে পরাজয়ের কারণ কাঁটাছেঁড়া করতে গিয়ে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য দলীয় নেতৃত্বের কাছে জমা পড়েছে বলে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে গত ১৮ মার্চ পুরুলিয়ায় এসেছিলেন মোদী। মফসসল থানার ভাঙড়া এলাকায় তিনি সভা করেছিলেন। জেলার অন্যান্য প্রান্তের সঙ্গে মানবাজার বিধানসভা কেন্দ্র থেকেও বহু কর্মী সমর্থক ওই সভায় ভিড় জমিয়েছিলেন। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সভায় লোক ভরানোর জন্য মানবাজার বিধানসভা কেন্দ্রের প্রতিটি বুথ থেকে গাড়ি করে লোক নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিজেপির জেলা নেতারা। সেইমতো প্রায় প্রতিটি বুথ থেকেই ছোট ও বড় গাড়ি ভাড়া করেন বুথ স্তরের নেতারা। সেই গাড়ি ভাড়ার বকেয়া টাকা মেটাতে গিয়েই তাঁদের বিপাকে পড়তে হয়।
মানবাজার-১ ব্লকের বিজেপির এক নেতা বলেন, মানবাজার বিধানসভা কেন্দ্রে বহু বুথের গাড়ি ভাড়ার টাকা সেই সময় মেটানো হয়নি। দিল্লী থেকে টাকা এলেও তা অনেক বুথেই পৌঁছয়নি। সবমিলিয়ে প্রায় ৫ লক্ষ টাকারও বেশি গাড়ি ভাড়া বকেয়া ছিল। ভোটের ঠিক আগে বকেয়া গাড়ি ভাড়ার টাকা না পেয়ে বহু বুথ সভাপতি বেঁকে বসেন। বিষয়টি জেলা নেতাদের জানানো হলে তাঁরা প্রার্থীকে ওই বকেয়া মেটানোর নির্দেশ দেন। যদিও প্রার্থী তাতে সহমত হননি। তিনি বুথ খরচের জন্য নির্বাচনী তহবিল থেকে প্রায় পাঁচ হাজার টাকা করে দিয়েছিলেন। ওই টাকা দিয়েই বুথ সভাপতিদের অনেকে বকেয়া গাড়ি ভাড়া মেটান। ফলে ভোটের দিন বুথ খরচে টান পড়ে যায়।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্বাচনী জনসভাগুলির খরচ করার দায়িত্বে প্রার্থীদের রাখেনি দল। দলের জেলা নেতারা তা দেখাশোনা করছিলেন। প্রার্থীদের নির্বাচনী খরচের জন্য আলাদা টাকা দেওয়া হয়েছিল। মানবাজারের বিজেপির পরাজিত প্রার্থী গৌরী সিং সর্দার বলেন, নির্বাচনী তহবিলে দল যে টাকা দিয়েছিল তার হিসেব দল এবং নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হয়েছে। জনসভাগুলির খরচের বিষয়ে কিছু জানি না। ফলাফল পর্যালোচনা করতে গিয়ে বেশ কিছু কারণ উঠে এসেছে। তা দলের রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি।