দলের যুব সভাপতি ছিলেন। সেখান থেকে এবার অনেকটা বড় দায়িত্ব পেয়েছেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল থেকে তিনি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। অর্থাৎ দলের হয়ে যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে সিলমোহর দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন অভিষেক। আর সেই গুরুদায়িত্ব পেয়েই আজ তিনি ‘গুরুপ্রণাম’ শুরু করলেন। রবিবার দুপুরে অভিষেক গেলেন নাকতলায়, তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে। এরপর বিকেলে যান সুব্রত বক্সী ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে। মিষ্টি নিয়ে দলের এই বর্ষীয়ান নেতাদের কাছে আশীর্বাদ নিতে গিয়েছিলেন নতুন সাধারণ সম্পাদক।
সূত্রের খবর, পার্থ বাবুর সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটান অভিষেক। ওই পদের দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ নেন। দলীয় সূত্রে খবর, এরপর অভিষেক দলের আরও দুই বর্ষীয়ান নেতা সুব্রত বক্সি, সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতেও যান তাঁদের আশীর্বাদ ও পরামর্শ গ্রহণের জন্য। সন্ধ্যায় সুব্রত বক্সির বাড়িতে না গিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সোজা চলে যান তাঁর পার্টি অফিসে। ছোটবেলা থেকে দেখে আসা তরুণ ছেলেটার এত বড় সাফল্যে উচ্ছ্বসিত দলের অভিজ্ঞ মহল। সেই মনোভাবই প্রকাশ্যে এল এদিন।
অভিষেককে দেখামাত্র সুব্রত বক্সি তাঁকে একেবারে বুকে টেনে নিলেন। প্রণামের বিনিময়ে প্রথাগত আশীর্বাদী ভঙ্গিতে নয়, পুত্রস্নেহে আলিঙ্গন করেই সুব্রত বক্সি বুঝিয়ে দিলেন, আগামী দিনে তিনি সবরকমভাবে পাশে রয়েছেন। এতদিন যেভাবে গাইড করতেন, ভবিষ্যতেও তেমনই করবেন। সূত্রের খবর, অভিষেককে দেখে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন সুব্রত বক্সি। প্রায় অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংগ্রামী দিনগুলির কথা বলেন। পুত্রসম অভিষেককে বলেন, “মমতার আশীর্বাদ তোর সঙ্গে আছে, সব উজাড় করে দেব তোর জন্য।”
এরপর রাত আটটা নাগাদ অভিষেক পৌঁছে যান রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বালিগঞ্জের বাড়িতে। সেখানে তাঁরই জন্য যেন অপেক্ষায় ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। ফুলের তোড়া দিয়ে অভিষেককে স্বাগত জানান তিনি। উভয়ের মধ্যে কিছুক্ষণ কথাবার্তা হয়। উল্লেখ্য, তৃতীয়বার রাজ্যের ক্ষমতায় তৃণমূল আসার পর প্রশাসনিক মহলে বেশ কিছু রদবদল ঘটিয়েছিলেন সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার সাংগঠনিক স্তরে রদবদল করেছেন তিনি। আর সেখানেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বড় দায়িত্বে আনা হয়েছে। আর তারপরই ‘গুরু’দের আশীর্বাদ গ্রহণ শুরু করলেন তিনি।