একুশের নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভূতপূর্ব সাফল্যের পরই তৃণমূলে প্রত্যাবূর্তন করতে চেয়ে একের পর দলত্যাগী নেতারা ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমাও চেয়েছেন তৃণমূলত্যাগীরা। সোনালি গুহ, সরলা মুর্মু, দীপেন্দু বিশ্বাসরা ভোটের মুখে তৃণমূল ছেড়ে BJP-তে গিয়েছিলেন। সেই তাঁরাই আবার তৃণমূলে ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এই প্রেক্ষাপটে দলবদলুদের কি তৃণমূল ফের স্বাগত জানাবে?
শনিবার তৃণমূলের সাংগঠনিক বৈঠকেও দলবদলুদের দলে ফেরানো নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হল না। শুধুমাত্র সাংবাদিক বৈঠকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বললেন, ‘দলে যাঁরা ফিরতে চাইছেন, সে ব্যাপারে তৃণমূলনেত্রী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন’। অর্থাৎ, দলবদলুদের দলে ফেরানো নিয়ে শেষ কথা বললেন তৃণমূল সুপ্রিমোই। প্রসঙ্গত, একুশের ভোটে ঐতিহাসিক জয়ের পর কালীঘাটে সাংবাদিক বৈঠকে দলবদলুদের দলে ফেরার প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘আসুক না। কে বারণ করেছে? এলে স্বাগত!’ তৃণমূলনেত্রীর এই মন্তব্যের পরই শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে।
ক’দিন আগে মমতার উদ্দেশে টুইটারে সোনালি লিখেছিলে, ‘আমার প্রণাম নেবেন, আমি সোনালি গুহ, অত্যন্ত ভগ্ন হৃদয়ে বলছি যে, আমি আবেগপূর্ণ হয়ে চরম অভিমানে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে অন্য দলে গিয়েছিলাম, যেটা ছিল আমার চরম ভুল সিদ্ধান্ত। কিন্তু, সেখানে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারিনি। মাছ যেমন জল ছাড়া বাঁচতে পারে না, তেমনই আমি আপনাকে ছাড়া বাঁচতে পারব না। দিদি, আমি আপনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী, দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দিন। আপনি ক্ষমা না করলে আমি বাঁচব না। আপনার আঁচলের তলে আমাকে টেনে নিয়ে বাকি জীবনটা আপনার স্নেহতলে থাকার সুযোগ করে দিন’। সোনালির পাশাপাশি তৃণমূলে ফিরতে চেয়ে একই কাকুতিমিনতি করেছেন সরলা মুর্মু, বাচ্চু হাঁসদা, দীপেন্দু বিশ্বাসরা।
এমনকী, তৃণমূলে ফেরার জল্পনা বাড়িয়েছেন মুকুল রায়ের পুত্র শুভ্রাংশু রায়কে ঘিরে। সেই সঙ্গে মুকুল রায়কে ঘিরেও জল্পনা চলছে। অন্যদিকে, প্রাক্তন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরেও জল্পনা চলছে। এমন প্রেক্ষাপটে শেষ পর্যন্ত দলত্যাগীদের দলে ফেরান কিনা মমতা, সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।