মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই সৌজন্যের রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন। সেই পথে হেঁটেই বুধবার সন্ধ্যায় বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের অসুস্থ স্ত্রী কৃষ্ণাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনাও শুরু হয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার অভিষেক সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ঘটনাটি রাজনৈতিকভাবে দেখার কোনও মানে হয় না। তাঁর কথায়, ‘উনি শুধু মুকুল রায়ের স্ত্রী নন, আমার কাছে মাতৃসমা। ছোটবেলা থেকে ওঁকে আমি চিনি। রাজনৈতিক ভাবে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। কিন্তু কোথাও একটা মানবতা বোধ কাজ করে।’
অভিষেকের এই প্রতিক্রিয়ায় স্বভাবতই আপ্লুত মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু রায়। তাঁর মতে, অভিষেকের এই সৌজন্যবোধ ভারতীয় রাজনীতিতে অন্য মাত্রা এনে দেবে। শুভ্রাংশু বলেন, ‘অভিষেক আমার মাকে সম্মান দেয়। যখনই দেখা হয়, মায়ের খবর নেয়। ও যা করেছে, রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে করেছে।’ এদিকে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ মুকুল রায়কে ফোন করে তাঁর স্ত্রীর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। মিনিট দুয়েক দু’জনের কথা হয়।
তবে প্রধানমন্ত্রীর ফোনের থেকেও তাঁর মাকে অভিষেকের দেখতে আসা অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন শুভ্রাংশু। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বিজেপির কর্মকর্তা। আর আমার বাবা বিজেপি কর্মী। তিনি তাঁর দায়িত্ব পালন করেছেন। এই বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। কিন্তু তবে বিরোধী দলের হয়েও অভিষেক যা করেছে, তা প্রশংসার দাবি রাখে।’ শুভ্রাংশু এ-ও জানান, শুধু অভিষেকই নয়, ফোন করে তাঁর মায়ের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেন তৃণমূলের আরও অনেক শীর্ষ নেতা।
প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই শুভ্রাংশু ফেসবুকে একটি পোস্ট করে বলেছিলেন, ‘তৃণমূলের সমালোচনা করার আগে বিজেপির উচিত আত্মসমালোচনা করা।’ স্বাভাবিকভাবেই মুকুল-পুত্রের এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছিল— তবে কি শুভ্রাংশু পুরোনো দলে ফিরে যাচ্ছেন? সেই জল্পনা কিন্তু খারিজ করে দেননি শুভ্রাংশু। জল্পনা জিইয়ে রেখেই তিনি বলেন, ‘এখন মাকে সুস্থ করে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য। অন্য কিছু নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না। এ সব নিয়ে পরে ভাবা যাবে।’