কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে যেখানে সাংসদ তহবিলের টাকা থেকে সাধারণ মানুষের উন্নতি সাধন করা প্রয়োজন, সেখানে রীতিমত খালি হাতে বসে থাকতে হচ্ছে বাংলার কয়েকজন সাংসদকে। তাঁদের মধ্যেই একজন বহরমপুরের সাংসদ তথা লোকসভা কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী। কয়েকদিন আগেই লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, সাংসদ তহবিলের টাকা তিনি পাচ্ছেন না। সুতরাং কোভিড পরিস্থিতিতে মানুষের সেবা করা যাচ্ছে না। বিষয়টিতে যেন স্পিকার হস্তক্ষেপ করেন।
অধীরের চিঠির কথা প্রকাশ্যে আসতেই হইচই শুরু হয় সংসদের অন্দরে। এবার বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদের পাশাপাশি নিজের সাংসদ তহবিলের বকেয়া টাকাও আটকে থাকার কথা চিঠি লিখে জানালেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মালা রায়। কেন্দ্রীয় বাজেটে অনুমোদন সত্ত্বেও উন্নয়নের টাকা মিলছে না বলে চিঠিতে লেখা হয়েছে। প্রাপ্য টাকা চেয়ে লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লাকে চিঠি লিখলেন দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ।
এখন করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে। তাই সাংসদ তহবিলের টাকা না পাওয়ায় থমকে রয়েছে উন্নয়নের কাজ। করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ায় কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সব সাংসদের জানানো হয়েছিল, ২০২০-২০২১ ও ২০২১-২০২২ অর্থবর্ষের সাংসদ তহবিলের বরাদ্দ ১০ কোটি টাকা দেওয়া হবে না। সেই সঙ্গে সাংসদদের বেতনও ৩০ শতাংশ কেটে নেওয়ার কথা জানানো হয়। কেন্দ্রের এই ফরমান মেনে নিতে হয় সব সাংসদকেই। দেশের উন্নতিকল্পে তা মেনেও নেন সকল সাংসদ।
তাহলে গোলমাল বাঁধল কোথায়? জানা গিয়েছে, গোলমাল বেঁধেছে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের বকেয়া টাকা নিয়ে। সূত্রের খবর, সেই টাকা এখনও সাংসদরা পাননি। এই অর্থবর্ষের প্রথম ৬ মাসের জন্য আড়াই কোটি টাকা দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। বাকি আড়াই কোটি টাকা পরে দেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু বছর ঘুরলেও সে টাকা হাতে পাননি সাংসদরা। কেন্দ্রের সাংসদ তহবিল সংক্রান্ত দফতরে যোগাযোগ করলে জানানো হয় টাকা নেই। যা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মালা রায় করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় আটটি অ্যাম্বুলেন্স ও পাঁচটি শববাহী শকটের জন্য টেন্ডার ডেকেছেন। অথচ সেই টাকা পৌঁছয়নি কলকাতা পুরসভায়। মালা রায়ের সাংসদ তহবিলের নোডাল এজেন্সি কলকাতা পুরসভা। এই বিষয়ে মালা রায়ের বক্তব্য, “যাঁরা আমাদের জিতিয়ে সাংসদ করেছেন তাঁরা এসব জানেন না। তাঁরা কাজ চান।” অভিযোগের সুর চড়িয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। তিনি বলেন, “এভাবে করোনাকে অজুহাত করে সাংসদদের টাকা হাতাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।”