আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলির জল্পনায় ইতি। এই মুহূর্তে তাঁকে রাজ্যের মুখ্যসচিবের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে পারছে না রাজ্য, তা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, চিঠিতে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের একাধিক ফাঁকফোকরের কথা উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন এই মুহূর্তে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘রিলিজ অর্ডার’ দিতে পারছে না, তা বিস্তারিত জানিয়েছেন। পাশাপাশি, কেন্দ্রের ওই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের জন্য লিখিত আবেদন জানিয়েছেন মমতা। দাবি, অনুরোধ, সমালোচনার মিশেলে নরমে-গরমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে ৫ পাতার চিঠি পৌঁছল প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাছে।
৩১ মে অর্থাৎ সোমবার সকালেই রাজ্যের মুখ্যসচিবের দিল্লিতে গিয়ে নর্থ ব্লকে কর্মীবর্গ বিভাগের কাজে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। গত শুক্রবার আচমকা কেন্দ্রের তরফে চিঠি পাঠিয়ে এ কথা জানানো হয়। তারপর থেকেই তাঁর এই বদলির নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়। রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করে, মতামত না নিয়ে একতরফাভাবে কেন্দ্রের এই চিঠি ‘রাজনৈতিক অভিসন্ধিমূলক’ বলে অভিযোগ ওঠে বিভিন্ন মহলে। জল্পনা চলছিলই, মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে এখনই ছাড়বে না রাজ্য। করোনা, যশ পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিনি এত গুরুত্বপূর্ণ বলে তাঁর কার্যকালের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে কেন্দ্রের অনুমতি সাপেক্ষে। তা সত্ত্বেও সংশয় ছিল। সোমবার আলাপন নিজে কী করবেন, সেদিকেই চোখ ছিল সব মহলের।
রবিবার, ছুটির দিন বিকেলে আলাপনের সস্ত্রীক নবান্নে যাওয়া, নিজের ঘরে প্রায় ৩ ঘণ্টা সময় কাটানো – এসবই আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছিল। এরপর সোমবার সকালেই মুখ্যমন্ত্রী নিজে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, রাজ্য কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে চলেছে। মুখ্যসচিবের কাঁধে অনেক দায়িত্ব। তাছাড়া তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের অস্থির পরিস্থিতির কথা অর্থাৎ সদ্য ভাইকে হারানোর খবরও প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে জানিয়েছেন মমতা। এই অবস্থায় আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে এখনই ছাড়া যাচ্ছে না। পাশাপাশি, কেন রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করে আমলার বদলি নিয়ে একতরফা সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র, সেই প্রশ্নও তিনি তুলেছেন চিঠিতে। এই পদক্ষেপ যে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী, তাও উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।