যথা সময়ে যথাযথ প্রতিক্রিয়া। রাজনীতির ঠান্ডা লড়াইতে এটাই স্ট্র্যাটেজি। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাঁটলেন ঠিক সেই পথে। রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের মাঝে এদিন নিজে আর তেমন বেশি প্রতিক্রিয়া দিলেন না। নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে এ নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে, মুখ্যমন্ত্রীর অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর, ‘কেন্দ্র সরকার প্রথমে চিঠি দিয়েছিল। আমরা তার জবাব দিয়েছি। এটা তো সৌজন্য। কেন্দ্র-রাজ্য সবসময়ে এভাবে সমন্বয় রাখবে, সেটাই স্বাভাবিক। এর বেশি কিছু এখন আর বলতে পারব না। আর আমার হাতে কিছু নেই’।
শুক্রবার আচমকাই রাজ্যের মুখ্যসচিবকে দিল্লীতে বদলির নোটিস দিয়ে চিঠি পাঠায় কেন্দ্র। অথচ এই মুহূর্তে তাঁর উপর রাজ্যের বহু কাজের দায়িত্ব। তাই তাঁর বদলি নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয় কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্ব। পরেরদিন এ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ তোলেন। মৌখিকভাবে আবেদন জানান, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লীতে বদলির নির্দেশ প্রত্যাহার করা হোক। হাতে সময় ছিল খুব কম। সোমবারই তাঁকে নর্থ ব্লকের কর্মীবর্গ মন্ত্রকে যোগ দিতে বলা হয়। অথচ রাজ্যের তরফে তাঁকে ‘রিলিজ অর্ডার’ দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে নানা জল্পনার অবসান ঘটিয়ে সোমবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী নিজে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানিয়ে দেন, এখনই মুখ্যসচিবকে ছাড়া সম্ভব হচ্ছে না। চিঠিতে নরমে-গরমে বেশ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগও তুলেছেন।
এরপর দুপুরে সাংবাদিক বৈঠকে তাঁকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জানান, ‘চিঠির উত্তর চিঠি দেওয়াটা ধারাবাহিক একটা প্রক্রিয়া। সেটাই করা হয়েছে। এবার আর কিছু আমার হাতে নেই। আমি আর বেশি কিছু জানিও না। পরে কিছু জানতে পারলে এ নিয়ে কথা বলা যাবে’। অর্থাৎ বোঝা গেল, আলাপন প্রসঙ্গে ইতিমধ্যেই আলোচনার জল আর বিস্তার করায় আগ্রহী নন মুখ্যমন্ত্রী। বরং তাতে এবার ইতি টানতে চান তিনি। এদিকে, সোমবার নির্দিষ্ট সময়ে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় নর্থ ব্লকে রিপোর্ট না করায় তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে কর্মীবর্গ মন্ত্রক। সূত্রের খবর, এ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।