শেষ পর্যন্ত দিল্লী গেলেন না মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। সকাল ১০টার মধ্যেই আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লীর নর্থ ব্লকে কর্মীবর্গ ও প্রশিক্ষণ দফতরে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু সকাল ৯ পর্যন্ত কলকাতা থেকে দিল্লীগামী কোনও বিমানেই তাঁর নামে বুকিং নেই। কলকাতা বিমান বন্দর সূত্রে খবর, দিল্লীগামী তৃতীয় বিমান এ/৪০২ যেটি সকাল ১০.২৫ মিনিটে ওড়ে, তাতেও বুকিং নেই মুখ্যসচিবের। রাজ্য তাঁকে ছাড়পত্র না দেওয়াতেই আলাপনের দিলি যাওয়া হচ্ছে না বলে খবর।
সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ নবান্নে দুয়ারে ত্রাণ নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক রয়েছে। দুয়ারে ত্রাণ প্রকল্পের টাস্ক ফোর্সের মাথায় রয়েছেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে শোনা যাচ্ছে, এই বৈঠকে মুখ্যসচিবের পৌরহিত্য করার কথা থাকলেও তিনি করছেন না। পৌরহিত্য করছেন স্বরাষ্ট্রসচিব। দুপুর ৩টের সময়ে নবান্নে যশ পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক রয়েছে। তাতে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়েই বৈঠক করার কথা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
প্রসঙ্গত, গত বছর অক্টোবর মাসে মুখ্যসচিব পদে দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। ৩১ মে অবসর গ্রহণের কথা ছিল আলাপনের। কিন্তু এর পরও তাঁকে মুখ্যসচিব পদে রেখে দেওয়ার জন্যে কেন্দ্রকে প্রস্তাব পাঠায় রাজ্য। কেন্দ্র তাতে সম্মতিও দেয়। কিন্তু গোল বাঁধে গত শুক্রবার। কলাইকুণ্ডায় প্রধানমন্ত্রীর ঝড় বৈঠকে যোগ দেননি মুখ্যমন্ত্রী এবং মুখ্যসচিব। সেই রাতেই আসে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলির নির্দেশ। তাতে বলা হয়, সোমবার সকাল ১০টায় দিল্লীর নর্থ ব্লকে কর্মীবর্গ ও প্রশিক্ষণ দফতরে রিপোর্ট জমা দিতে হবে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ক্ষোভের পারদ আরও চড়ে।
স্বাভাবিক ভাবেই এই নির্দেশকে ঘিরে তৈরি হয় বিতর্ক। রাজ্য সরকারের সঙ্গে পরামর্শ না করেই এ রকম নির্দেশ দেওয়া কতটা ‘আইনি’ সে প্রশ্নও তুলেছেন প্রাক্তন আমলাদের একটা বড় অংশ। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস রুলস ১৯৫৪। ঠিক এই বিধিকে কাজে লাগিয়েই আমলাদের বদলি করা হয়। রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলির ক্ষেত্রেও এই বিধির ৬/ ১ ধারা ব্যবহার করা হয়েছে। এই নিয়েই সংঘাত বেঁধেছে কেন্দ্র-রাজ্যের। তবে এক্ষেত্রে একটি বিষয় উল্লেখ্য, কেন্দ্রের হাতে ক্ষমতা আছে আধিকারিককে তলব করার। কিন্তু এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আমলার ইচ্ছারও গুরুত্ব আছে। ইচ্ছের বিরুদ্ধে তাঁকে দিল্লী আনা সহজ নয়। আর সেটাই হল!