আসন্ন খড়দহ বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী হতে চলেছেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভবানীপুরের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফার পরেই রাজ্যের কৃষিমন্ত্রীকে এ বিষয়ে সবুজ সংকেত দিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই খড়দহ এলাকায় যাতায়াত শুরু করে দিয়েছেন শোভনদেব। প্রসঙ্গত, খড়দহের প্রার্থী হিসেবে আরও কয়েক জনের নাম ঘোরাফেরা করেছে। অমিত মিত্রের নামও সেই তালিকায় ছিল। অভিনেত্রী তৃণা সাহাকেও সম্ভাব্য প্রার্থী বলে ভাবা হচ্ছিল। তৃণা নিজেও সেই সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন। তবে তৃণমূল সূত্র জানাচ্ছে, শোভনদেবের নাম চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে কয়েক দিন আগেই।
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রীর জন্য নিজের জেতা ভবানীপুর বিধানসভা আসনটি ১৯ দিনের মাথায় ছেড়ে দেন শোভনদেব। প্রবীণ রাজনীতিককে খড়দহে গিয়ে ভোটের প্রস্তুতি শুরু করতে বলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নির্দেশ পেয়েই মঙ্গলবার খড়দহ এলাকার একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছেন শোভনদেববাবু। তবে তাঁর এই যাতায়াতের সঙ্গে ভোটে দাঁড়ানোর কোনও সম্পর্ক নেই বলেই দাবি শোভনদেবের। খড়দহের পুর প্রশাসক নীলু সরকারের উদ্যোগে একটি অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের উদ্বোধন হবে। উদ্বোধনের দিন কয়েকশো মানুষকে খাওয়ানোও হবে। অনুষ্ঠানে থাকবেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, দমদমের সাংসদ সৌগত রায়, বিধানসভার মুখ্যসচেতক নির্মল ঘোষ ও ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা। সেই অনুষ্ঠানে শোভনদেবকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
তবে তিনিই যে খড়দহ উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী, তা অবশ্য স্বীকার করতে চাননি শোভনদেব। তাঁর জবাব, “দলের প্রথম দিনের সৈনিক আমি। দল যখন যে নির্দেশ দিয়েছে, বা যখন যে দায়িত্ব দিয়েছে তা পালন করেছি। আগামী দিনেও যদি দল কোনও দায়িত্ব দেয় তা পালন করব। আর কোথায় কে প্রার্থী হবে, তা দলই ঘোষণা করবে। আমি এ বিষয়ে কিছু বলব না।” তবে শোভনদেবই যে প্রার্থী, তার আভাস পেয়ে গিয়েছেন খড়দহের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরাও। অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র এ বারের বিধানসভা ভোটে প্রার্থী না হওয়ায় খড়দহ কেন্দ্রে কাজল সিংহকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। কিন্তু ভোটের ফলাফল ঘোষণার আগেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। ফলাফলে দেখা যায়, ২৮ হাজারের বেশি ভোটে বিজেপি প্রার্থী শীলভদ্র দত্তকে হারিয়েছেন কাজল। উপনির্বাচন অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে। রাজনীতির বিশেষজ্ঞদের ধারণা ছিল, খড়দহ উপনির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন মমতা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর জন্য ভবানীপুর আসন ছেড়ে দেওয়ার পরেই শোভনদেবের নাম উঠে আসে প্রার্থী হিসেবে। সূত্রের খবর, দলনেত্রী স্বয়ং প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন তাঁকে।