করোনা-ঘূর্ণিঝড় যশের জোড়া বিপর্যয়ের সঙ্গে যখন লড়তে হচ্ছে বাংলাকে, তখন আচমকাই রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মিবর্গ ও প্রশিক্ষণ মন্ত্রকের নতুন পদে যোগ দিতে দিল্লী ডেকে পাঠিয়েছে কেন্দ্র। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছে মোদী সরকার। এই ইস্যুতে এবার রাজ্যের শাসক দলের পাশে দাঁড়াল কংগ্রেস এবং সিপিআই(এম-এল) লিবারেশন।
কংগ্রেসের তরফে এই ঘটনার কড়া সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস সাংসদ তথা বিশিষ্ট আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। তিনি টুইটারে লিখেছেন, স্বাধীনতার ৭৪ বছরের ইতিহাসে কোনও মুখ্য সচিবকে বাধ্যতামূলক ভাবে বা সম্মতি ছাড়াই কেন্দ্রীয় সার্ভিসে যোগ দেওয়ার নজির রয়েছে? তাঁর অবসরের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তা করতে বলা হয়েছে। এবং রাজ্য সরকারের কোনও সম্মতি ছাড়াই। কেন্দ্র আমাকে এ ব্যাপারে একটু শিক্ষিত করে তুলুক।
এ নিয়ে সিপিআই(এম-এল) লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য ফেসবুকে লিখেছেন, মোদী সরকার ঔপনিবেশিক শাসকের মতো ব্যবহার করছে। এক রাজ্যের মুখ্যসচিব দিল্লীতে ডেকে নিচ্ছে। স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এক নজির তৈরি করছে। মোদী-শাহ জুটিকে হারানোর জন্য বাংলার মানুষকে এই শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, আগেই তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় ঘটনার কড়া সমালোচনা করে বলেছেন, এটি ‘জোর করে কেন্দ্রীয় ডেপুটেশন’। ফেডারেল ব্যবস্থাকে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, স্বাধীনতার পরে কখনও এমন হয়েছে? রাজ্যের মুখ্য সচিবকে জোর করে কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে পাঠানো হয়েছে? সুখেন্দুশেখর টুইটে লিখেছেন, তিন সপ্তাহ আগে বাংলার মানুষ তাঁদের রাস্তা দেখিয়ে দিয়েছে। আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা টুইটে দল পাকাচ্ছে। আর বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে ভাষণ দিচ্ছেন। কিছু মানুষ কখনও কিছুই শিখবেন না।
আবার, তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাল কাজ করছেন, তার বদনাম করতে এই চেষ্টা। তাঁর দাবি, বিজেপি নিজেদের হার মেনে নিতে পারেনি। ভোটে হারের ফলে তারা এই ধরনের রাজনীতি করছে। যখন বাংলাকে ঘূর্ণিঝড় যশ তছনছ করে দিয়েছে। আর তখন বাংলার মানুষ যাতে আরও সমস্যায় পড়ে, তার চেষ্টা করছে কেন্দ্র। তারা বাংলার মানুষের শত্রু হিসেবে কাজ করছে।