একুশের ভোটের মুখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি ক্ষোভ উগরে কাঁদতে কাঁদতে তৃণমূল ছেড়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমোর দীর্ঘদীনের ছায়াসঙ্গী সোনালি গুহ একুশের ফল ঘোষণার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে কাকুতিমিনতি করে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফেরার ব্যাপারে ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন সাতগাছিয়ার প্রাক্তন বিধায়ক। শেষ পর্যন্ত কি মান-অভিমান পর্ব ঘুচিয়ে সোনালিকে আবার কাছে টেনে নিচ্ছেন তৃণমূলনেত্রী? সোনালি গুহের মন্তব্য সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। কালীঘাটে সোনালি গুহকে ডেকে পাঠান মমতা। ‘প্রিয় দিদির’ আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে কালীঘাটে গেলেন সোনালি।
এই প্রসঙ্গে একটি দৈনিক সংবাদমাধ্যমকে সোনালি গুহ বলেন, ‘আমি কালীঘাটে ম্যাডামের বাড়িতে গিয়েছিলাম। দেখা হয়েছে দিদির সঙ্গে। দিদির ভাই প্রয়াত হয়েছেন। তাঁর পারলৌকিক কাজে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন দিদি। দিদি আমায় ডেকেছিলেন, তাই গিয়েছিলাম। দিদিকে নমস্কার জানাই। তৃণমূলের সুব্রত বক্সি আর আমি ছাড়া কাউকে তো আমন্ত্রণ তালিকায় দেখলাম না’। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়।
তাহলে কি অভিমান ভুলে সোনালিকে কাছে টেনে নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? সোনালি বললেন, ‘বডি ল্যাঙ্গোয়েজ দেখে তো তাই মনে হয়েছে। পজিটিভ লেগেছে। দেখা যাক’। কবে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন? ‘৫ তারিখে কোর কমিটির বৈঠক ডেকেছেন। সেখানে নিশ্চয়ই কিছু ঘোষণা করবেন। আদে দলে যোগ দিই। তারপর বলব’। উল্লেখ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক জীবনে দীর্ঘদিনের সৈনিক সোনালি। মমতার ছায়াসঙ্গী হিসেবেই বঙ্গ রাজনীতিতে পরিচিত সোনালি। কিন্তু, বিধানসভা নির্বাচনের মুখে সোনালির দলবদল করে বিজেপিতে যোগ দেন।
ফল প্রকাশের পরই অবশ্য ‘ভুল’ ভাঙে সোনালির। ক’দিন আগে মমতার উদ্দেশে টুইটারে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমার প্রণাম নেবেন, আমি সোনালি গুহ, অত্যন্ত ভগ্ন হৃদয়ে বলছি যে, আমি আবেগপূর্ণ হয়ে চরম অভিমানে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে অন্য দলে গিয়েছিলাম, যেটা ছিল আমার চরম ভুল সিদ্ধান্ত। কিন্তু, সেখানে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারিনি। মাছ যেমন জল ছাড়া বাঁচতে পারে না, তেমনই আমি আপনাকে ছাড়া বাঁচতে পারব না। দিদি, আমি আপনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী, দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দিন। আপনি ক্ষমা না করলে আমি বাঁচব না। আপনার আঁচলের তলে আমাকে টেনে নিয়ে বাকি জীবনটা আপনার স্নেহতলে থাকার সুযোগ করে দিন’।