একা সর্ষের তেলের আগুন দামে রক্ষে নেই, দোসর ডালের দাম বৃদ্ধি! আর এর দুয়ের জেরেই এবার আরও দামী হতে চলেছে বাঙালির অন্যতম প্রিয় ডাল-ভাত-আলুসিদ্ধ। ডাল ও ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার আশঙ্কা প্রকাশ করে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় ডাল ও ভোজ্য তেলের দাম বাড়তে পারে। তবে ২০২০-২১ সালে বিপুল উৎপাদনের কারণে খাদ্যশস্যের দাম কমার সম্ভাবনার আশার কথা রয়েছে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বার্ষিক রিপোর্টে। তারা আশা করছে, অদূর ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দামের ক্ষেত্রে অস্থিরতা চলবে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, পাইকারি মূল্য সূচক এবং ক্রেতা মূল্য সূচকের ফারাক ভিত্তিক মুদ্রাস্ফীতিই খাদ্য ক্ষেত্রে দাম বৃদ্ধি তুলে ধরছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, গত বছর সারা দেশে করোনা-লকডাউন জারি হওয়ার পর থেকে পাইকারি মূল্য সূচক কমলেও ক্রেতা মূল্য সূচক ভিত্তিক খাদ্যের বাজারদর বেড়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘এতে স্পষ্ট যে সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটেছে, যার সুযোগ নিয়ে দাম বাড়ছে।’ এমনকী, আনলক পর্ব শুরু হওয়ার পর থেকে খাদ্যপণ্যের খুচরো দাম যে হারে বেড়েছে, তা সাধারণ গরমের সময়ের দাম বৃদ্ধির থেকে অনেকটাই বেশি।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘ডাল ও ভোজ্য তেলের মতো খাদ্যপণ্যে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম উর্ধ্বগামী হতে পারে। তবে ২০২০-২১ সালে বিপুল উৎপাদন হওয়ার জন্য খাদ্যশস্যের দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে।’ অপরিশোধিত তেলের দাম নিয়ে তারা জানিয়েছে, চাহিদা ফেরার আশা এবং ওপেক গোষ্ঠী ও তার সহযোগী দেশগুলির উৎপাদন হ্রাসের কারণে দাম বেড়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘শক্তি ক্ষেত্র ব্যতীত অন্যান্য পণ্যে খরচ বৃদ্ধির কারণে দাম বেড়েছে এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক হওয়ার পর চাহিদা বাড়লে তা আরও ঊর্ধ্বগামী হবে।’
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতে, করোনা অতিমারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাব আগামী দিনে মুদ্রাস্ফীতির উপর পড়তে পারে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘অতিমারীর কারণে বাজারে প্রতিযোগিতা কমে যায়। মার্চ থেকে দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পর করোনা সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা বৃদ্ধি এবং তার সঙ্গে সংক্রমণ ঠেকাতে বিভিন্ন বিধিনিষেধ ব্যবস্থা জারি হওয়ায় সরবরাহ ক্ষেত্রে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে তার জেরে আগামী দিনে মুদ্রাস্ফীতি প্রভাবিত হতে পারে।’