বুধবার সকালেই উড়িষ্যার বালাসোরে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’। তারপর ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া শেষ করে সময় যত এগিয়েছে, দেখা গিয়েছে ঝড়ের ধাক্কা অধিকাংশটাই গিয়ে লেগেছে উড়িষ্যায়। কিন্তু বাংলায় সংকট বাড়িয়েছে জলোছ্বাস। ঢেউয়ের তোড়ে প্রায় তছনছ হয়ে গিয়েছে দীঘা। ভেঙে গিয়েছে মেরিন ড্রাইভ। মাত্র কয়েক বছর আগে তৈরি মেরিন ড্রাইভ কীভাবে এত ক্ষতিগ্রস্ত হল, এবার রিভিউ মিটিংয়ে সেই প্রশ্নই তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেচ দফতরের কাজেও ক্ষোভপ্রকাশ করলেন তিনি। দিলেন তদন্তের নির্দেশ।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরই দীঘার পর্যটনকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পর্যটনকে আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছনোর লক্ষ্যে উদয়পুর থেকে দীঘা মোহনা পর্যন্ত সৌন্দর্যায়নে নজর দেওয়া হয়। আলোর বন্দোবস্ত করা হয়। তৈরি হয় বিশ্ববাংলা পার্ক। গড়ে ওঠে মেরিন এবং সি ড্রাইভও। তবে বুধবারের ঘূর্ণিঝড় ‘যশে’র দাপটে প্রায় তছনছ দীঘা। ওইদিন সকাল ৯টা ১৫ মিনিট নাগাদ উড়িষ্যার বালাসোরে আছড়ে পড়ে যশ। তার আগে থেকেই ফুঁসতে থাকে দীঘা। বইতে থাকে ঝোড়ো হাওয়া। সঙ্গে বৃষ্টির দাপট। দীঘায় ৩০ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হয়। নারকেল গাছও ছুঁয়ে ফেলে সমুদ্রের ঢেউ। তছনছ হয়ে যায় সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার একের পর হোটেল। সমুদ্রের নোনা জল এলাকায় ঢুকে ভেসে যায় প্রায় সর্বত্র।
বাদ যায়নি মেরিন ড্রাইভও। যশের দাপটে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে তারও। আর তাতেই বেজায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী।বৃহস্পতিবার নবান্নে বৈঠক চলাকালীন সেচ দফতরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। বিপর্যয়ের কথা স্বীকার করে নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, মাত্র কয়েক বছর আগে তৈরি মেরিন ড্রাইভের অবস্থা কেন এত খারাপ হল? বছর বছর ঘূর্ণিঝড়ে যদি এত খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয় তবে তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় এত পরিমাণ অর্থ কোথা থেকেই বা পাওয়া যাবে, সেই প্রশ্ন করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘টাকা কি জলে দেওয়া হবে নাকি টাকা দিয়ে জল আটকাব?’ সেচ দফতরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি এদিন তদন্তেরও নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।