টিকাকরণে দেরী হওয়ায় গুজরাত হাইকোর্টের তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ল মোদী রাজ্যের বিজেপি সরকার। আদালতের তরফে রাজ্যের টিকাকরণে দেরির প্রসঙ্গে কটাক্ষ করে বলা হয়, ‘রাজ্য সরকার কি টিকা কিনতে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা অনুসরণ করছে’?
রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি ও টিকাকরণ নিয়ে এর আগেও আদালতের সমালোচনার মুখে পড়েছিল রাজ্য সরকার। বুধবার টিকাকরণ সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে রাজ্য সরকারকে গুজরাত হাইকোর্টের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়, তারা যেন ১০ থেকে ২০ শতাংশ স্লট স্পট রেজিস্ট্রেশনে-র জন্য ফাঁকা রেখে দেয়। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে যেখানে সাধারণ মানুষের কাছে ইন্টারনেটের সুবিধা নেই নিজেদের নাম নথিভুক্ত করার জন্য।
কেন্দ্রের তরফে ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সীদের জন্য টিকা কেন্দ্রে গিয়ে নাম নথিভুক্ত করার সুবিধা চালু করলেও গুজরাট সরকার পুরনো নিয়মেই, অর্থাৎ কো-উইন প্ল্যাটফর্মে আগে থেকে নাম নথিভুক্ত করে স্লট বুকিংয়ের নিয়মই চালু রেখেছে।
গুজরাট সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বিচারপতি বেলা ত্রিবেদী ও ভার্গব ডি কারিয়ার বেঞ্চ রাজ্য সরকারের তরফে হাজির আইনজীবী কমল ত্রিবেদীকে বলেন, “১০০ টি স্লটের মধ্যে আপনারা ১০টি বা ২০টি স্লট স্পট রেজিস্ট্রেশনের জন্য খালি রাখতে পারছেন না? যদি আপনাদের দিনে ১০০টি টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকে, তবে ৮০ জন প্রাপক নিজেদের নাম অনলাইনে নথিভুক্ত করুক, বাকি ২০ জন টিকাকেন্দ্রে এসেই নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন, সেই ব্যবস্থা করা হোক।”
রাজ্যে মজুত টিকার সংখ্যা জানতে চাওয়া হলে অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, রাজ্যের ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সী মোট ৬.৫ কোটি বাসিন্দাদের টিকা দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই তিন কোটি ডোজ়ের অর্ডার দেওয়া হয়েছে দুই টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থার কাছে। তবে টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি একসঙ্গে এক সংখ্যক টিকা পাঠাতে পারবে না বলে জানিয়েছে, সে কথাও আদালতে জানানো হয়।
অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, প্রতিদিন টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি এক থেকে দুই লাখ টিকা পাঠাচ্ছে। মো মাসে মোট ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৬৫০টি কোভিশিল্ডের ডোজ় ও ২ লাখ ৪৯ হাজার ২৪০ ডোজ় কোভ্যাক্সিনের টিকা রাজ্যে এসেছে। আগামী জুন মাসে ৮ লক্ষ ৩০ হাজার ১৪০ ডোজ় কোভিশিল্ড ও ২ লক্ষ ৪৬ হাজার ৮৮০ ডোজ় কোভ্যাক্সিন আসবে বলে জানানো হয়েছে।
এর জবাবে গুজরাট হাইকোর্টের তরফে বলা হয়, “রাজ্য সরকার কি ভ্যাকসিন আনাতে পাঁচ বছরের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে? আমরা সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই, কিন্তু অন্য কোনও পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। আপনাদের উচিত টিকা আমদানির জন্য অন্য কোনও পথ খোঁজা উচিত।” আগামী ১৫ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।