আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস মতো বুধবার সকালেই উড়িষ্যার বালাসোরে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’। তবে তার আগে থেকেই রুদ্ররূপ ধারণ করেছে সমুদ্র। ফুঁসছে দীঘা। প্রায় ৩০ ফুটেরও বেশি জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। এ হেন পরিস্থিতি দেখে দুর্যোগের প্রভাবে বিদ্যুৎ এবং জল পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে বলেই আশঙ্কা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যদিও, পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই রাজ্যে মোট ১৭ কোম্পানি সেনা নামানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রাত থেকে প্রবল বৃষ্টিতে ভিজছে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত। সঙ্গে বইছে ঝোড়ো হাওয়া। তবে বুধবার ভোর থেকে দীঘার পরিস্থিতি ক্রমশই ভয়াল রূপ ধারণ করছে। ক্রমশই বাড়ছে হাওয়ার বেগ। প্রায় ৩০ ফুট জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। নারকেল গাছের ওপর দিয়ে সমুদ্রের ঢেউ গিয়েছে বলেও দাবি অনেকের। সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার প্রত্যেকটি হোটেল জলমগ্ন। এমনকী হোটেলের সামনে থাকা গাড়িও ভেসে গিয়েছে জলের তোড়ে। দীঘা, শংকরপুরের বিস্তীর্ণ রাস্তা হয়ে গিয়েছে জলমগ্ন। নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছেন। পাশাপাশি, বিধায়ক অখিল গিরিও পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছেন।
যদিও ঘূর্ণিঝড় যশের মোকাবিলায় আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছিল রাজ্য প্রশাসন। পরিস্থিতি অনুযায়ী ঠিক কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে বুধবার সকালে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘দীঘা থেকে দেড় লক্ষ মানুষকে সরানো হয়েছে। আরও অনেককেই সরানোর কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই ২০ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। জল জমেছে অনেক জায়গায়। ঘূর্ণিঝড়ের পাশাপাশি ভরা কোটালের জন্য অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। শহরের মোট আটটি ফ্লাইওভার বন্ধ। জল, বিদ্যুৎ সরবরাহ এখনও আছে। তবে পরবর্তীকালে ব্যাহত হতে পারে। আগামী ৪-৫ ঘণ্টা ধরে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ তাণ্ডব দেখাবে।’
করোনা আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক কাজ করছেন বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। দীঘার পাশাপাশি দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাধিক জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কুলতলির সাতটি নদীবাঁধ প্লাবিত হয়েছে। বাড়ির কথা ভেবে দুর্যোগ মাথায় নিয়ে ত্রাণশিবির থেকে সকলকে ফিরে না আসার অনুরোধ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ রুদ্ররূপ ধারণ করতে পারে তা আগেই আশঙ্কা করেছিল রাজ্য প্রশাসন। আমফানের থেকে শিক্ষা নিয়ে তাই আগেই একাধিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। নবান্ন এবং উপান্নে খোলা হয়েছে দু’টি কন্ট্রোল রুম। সেখানে রাতভর ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।