যদিও রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকা নয়। তবে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’-এর অভিমুখ খানিক ঝাড়খন্ডের দিকে ঘুরতেই প্রবল সাবধান জঙ্গলমহল এলাকা। সাইক্লোনের মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি সেরে রাখছে পুরুলিয়া। ‘যশ’-এর বিরুদ্ধে অসম যুদ্ধে তৈরি জেলার ৫ টি ব্লক। সেনাবাহিনী, এনডিআরএফ মোতায়েন করা হয়েছে। সেফ হোম, কন্ট্রোলরুম থেকে চলবে নজরদারি। আক্ষরিক অর্থেই যেন যুদ্ধের মোকাবিলায় প্রস্তুত পুরুলিয়া।
সব ঠিক থাকলে ‘যশ’ রাজ্যের উপকূলীয় অঞ্চলে আছড়ে পড়ার পর শক্তি খানিকটা কমবে। তারপর তার গতিপথ হবে ঝাড়খণ্ডের দিকে। সেই গতিপথে রয়েছে পুরুলিয়ার বান্দোয়ান, বরাবাজার, বলরামপুর, বাঘমুন্ডি, ঝালদা। ফলে ঘূর্ণিঝড়ের লেজের ধাক্কা খাবে জঙ্গলমহলের এই ৫ ব্লক। ঝড়-বৃষ্টির মত প্রাকৃতিক বিপর্যয় সামলাতে রুখাশুখা পুরুলিয়ায় সেনাবাহিনীর আগমন কার্যত এই প্রথম। পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন বলছে, সাম্প্রতিককালে এমন উদাহরণ নেই। তাছাড়া ঝড়ের জন্য ৪৩১টি সেফ হোমে ১৪,৩০০ জনকে সরিয়ে আনার পদক্ষেপও প্রথমবারের জন্য।
তবে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ঘূর্ণিঝড় রুট বদলে বান্দোয়ান থেকেই ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরের দিকে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, “ঘূর্ণিঝড় যশ নিয়ে আমরা একেবারে সতর্ক। জোরকদমে প্রস্তুতি চলছে। নামানো হয়েছে সেনবাহিনী, এনডিআরএফ। ৪৩১টি সেফ হোমে ১৪ হাজারের বেশি মানুষজনকে নিয়ে আসা হয়েছে। এছাড়া আরও একগুচ্ছ পদক্ষেপ নিয়েছি।” উল্লেখ্য, সোমবার রাত থেকেই ঝিরঝিরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে পুরুলিয়ায়। মঙ্গলবার সকাল থেকে দোসর হয়েছে ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া। বুধবার তার গতিবেগ হতে চলেছে ৮০ থেক ৯০ কিমি প্রতি ঘন্টা। সেই সঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসও দিয়েছে হাওয়া অফিস।
এই জেলায় পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন ছাড়াও কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে চার মহকুমা পুরুলিয়া সদর, ঝালদা, মানবাজার, রঘুনাথপুরে। এছাড়া তিন পুরসভা পুরুলিয়া, ঝালদা, রঘুনাথপুরও আলাদা করে সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে কন্ট্রোলরুম খুলেছে। জেলার কুড়িটি ব্লকে ব্লক প্রশাসনেরও পৃথক কন্ট্রোলরুম রয়েছে। পুরুলিয়া জেলা পুলিশের কন্ট্রোলরুমে রয়েছে পাঁচটি নম্বর। জেলা পুলিশ সুপার এস. সেলভামুরুগণ বলেন, “এক জন পুলিশ অফিসারের তত্বাবধানে দশ জন কনস্টেবল এবং এনভিএফকে নিয়ে একটি টিম তৈরি করা হয়েছে। সেখানে গাড়ি ছাড়াও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রয়েছে। থাকছে দুটি মোটরবাইকও।”