তৃতীয় বারের জন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। রাজ্যবাসী আস্থা রেখেছে মমতাতেই। তাঁরা এখন বলতেই পারেন যে, “মমতা হ্যায় তো মুনকিম হ্যায়।” কারণ, আক্ষরিক অর্থেই রেকর্ড সময়ে করে দেখালেন মমতা। ভোটের ফল প্রকাশের পর গত ৫ই মে তড়িঘড়ি মুখ্যমন্ত্রী পদে ফের শপথ নিয়েছেন তিনি। আজ সোমবার ২৪শে মে। মাঝে মাত্র ১৯ দিন। কিন্তু এর মধ্যেই ভোট প্রতিশ্রুতির বিষয়আশয় নিয়ে বড় পদক্ষেপ নিয়ে ফেললেন মমতা।
উল্লেখ্য, সোমবার নবান্নে মন্ত্রীসভার বৈঠকে সেই সব সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। নির্বাচনী ইস্তেহারে তৃণমূল কংগ্রেস যে যে অঙ্গীকার করেছিল তার মধ্যে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি এদিন মন্ত্রীসভার বৈঠকে পাশ হয়েছে। (১) দুয়ারে রেশন যোজনা। (২) পরিবার পিছু মহিলাদের মাসে ৫০০ টাকা হাত খরচ। এবং (৩) উচ্চশিক্ষার জন্য ছাত্র ক্রেডিট কার্ড যোজনা। তা ছাড়া মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন পদে ২৫০০ কর্মী নিয়োগ করবে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর। প্রসঙ্গত, একুশের ভোটে তৃণমূল ২০০ পার করার পরে অনেক বিশ্লেষকই বলেছিলেন নির্বাচনী ইস্তেহারে দুয়ারে রেশন প্রকল্প ও মহিলাদের হাত খরচা দেওয়ার ঘোষণা বড়সড় প্রভাব ফেলেছে। তৃণমূলের অনেকের ধারণাও তাই।
ভোটের আগে মমতা বলেছিলেন, বাংলার মা-বোনেদের তিনি মাসে একটা নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দেবেন। কখনও সেটাকে বলেছিলেন হাত খরচ আবার কখনও বলেছিলেন পকেট মানি। মমতার কথায়, “মা বোনেদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার!” সাধারণ মহিলাদের মাসে ৫০০ টাকা করে দেবে রাজ্য সরকার। তপশিলি জাতি-উপজাতি ভুক্ত হলে সেই অঙ্ক দ্বিগুণ। অর্থাৎ বছরে ১২ হাজার টাকা।
পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের আর্থিক সঙ্গতি যাতে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে যাতে অন্তরায় না হয় সে কারণে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত শিক্ষা ঋণ দেওয়ার কথা ইস্তেহারে ঘোষণা করেছিল তৃণমূল। যার পোশাকি নাম স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড। এতে গ্যারেন্টার হবে সরকার। এদিন তাও পাশ হয়েছে মন্ত্রীসভার বৈঠকে। তিনটি প্রকল্পের জন্যই মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে টাস্ক ফোর্স তৈরি করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তাছাড়াও এদিন মন্ত্রীসভার বৈঠকে বিদ্যুৎ, বিপর্যয় মোকাবিলা ও ত্রাণ এবং খাদ্য দফতরকে বেশ কিছু নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস চলে যাওয়ার পরে যাতে দ্রুত পুনর্গঠন করা যায় এবং পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছে দেওয়া যায় সে ব্যাপারে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।