করোনা পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা পাচ্ছেন না প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষেরা। রাজ্যের সব অঞ্চলকে সমান গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। এবার কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলে এই পক্ষপাতীত্বকে ‘সৎ সন্তান সুলভ আচরণ’ বলে অ্যাখ্যা দিল উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট।
রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে একাধিক আবেদনের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি আরএস চৌহান ও বিচারপতি অলোক ভর্মার বেঞ্চ বৃহস্পতিবার জানায় যে উত্তরাখণ্ডের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিতে চিকিৎসা পরিষেবায় সাহায্যের আবেদন করা হলেও কেন্দ্রের তরফে এখনও কোনও জবাব দেওয়া হয়নি। উত্তরাখণ্ডকে এভাবে অদেখা কেন করা হচ্ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন করে উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের তরফে রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয় তিনি যেন কেন্দ্রের কাছে এক হাজার অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ও করোনা চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রীগুলি দ্রুত উত্তরাখণ্ডের প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য ফের আবেদন জানান। আদালতের তরফে জানানো হয়, এই বিষয়ে ১০ মে কেন্দ্রকে একটি চিঠি লেখা হলেও তার এখনও কোনও জবাব মেলেনি।
মোদী সরকারের এই আচরণে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে হাইকোর্টের প্রশ্ন, ‘উত্তরাখণ্ডকে এভাবে অবহেলা করা হচ্ছে কেন? কেন্দ্রের কাছ থেকে এইরকম সৎ সন্তান সুলভ আচরণই বা কেন পেতে হচ্ছে? এমনকি উত্তরাখণ্ডের যেসমস্ত বাসিন্দা বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে কাজ করেন, তারাও আবেদনে সাড়া দিচ্ছেন না।’
কেন্দ্রের অক্সিজেন বন্টন নীতি নিয়েও প্রশ্ন করে বলা হয়, ‘৩৫০ মেট্রিক টন অক্সিজেন উৎপাদন করেও উত্তরাখণ্ডকে কেন উৎপাদনের ৪০ শতাংশ অর্থাৎ ১৮৩ মেট্রিক টন রফতানি করতে হচ্ছে?’ উত্তরাখণ্ডের বরাদ্দ অক্সিজেনের পরিমাণ কেন ৩০০ টন করা হচ্ছে না, তা নিয়েও জানতে চাওয়া হয় কেন্দ্রের আইনজীবীর কাছে।
একইসঙ্গে উত্তরাখণ্ড সরকারের চারধাম খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ও ভিড় নিয়ন্ত্রণের সমালোচনা করে বলা হয়, ‘কেন বারবার আমাদের রাজ্যকে লজ্জাজনক পরিস্থিতিতে ফেলছেন? আদালতকে বোকা বানাতে পারলেও সাধারণ মানুষকে বোকা বানানো সহজ নয়। দেশের লাখো মানুষের জীবন নিয়ে খেলা হচ্ছে এভাবে।’