বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতে যখন করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোমর বেঁধে নেমেছে তৃণমূল সরকার, সংক্রমণ রুখতে রাজ্যজুড়ে কার্যত লকডাউন জারি করা হয়েছে, তখনই প্রায় পাঁচ বছরের পুরনো নারদকাণ্ডে অতিসক্রিয় সিবিআই। সোমবার রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র, প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের পাশাপাশি গ্রেফতার করা হয় রাজ্যের আরেক মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কেও। কেন্দ্রে যখন তিনি গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী, বাংলায় তখন থেকেই পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের ভার এই বর্ষীয়ান নেতার ওপর। তাই সোমবার রাতে সেই সুব্রতকে জেল হাজতে পাঠানোর পর ক্ষোভ উগড়ে দিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ। টুইটে তিনি বলেন, ‘বিজেপির ডাহা পরাজয়ের পর বাংলায় এখন যা হচ্ছে তা হল এক কথায় জনমতের ওপর অত্যাচার। রাজ্যপালের ভূমিকা অসাংবিধানিক। স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে যে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী তাঁদের হার হজম করতে পারছেন না। কঠোরতম শব্দে এর নিন্দা করা উচিত।’
প্রসঙ্গত, জয়রাম ও সুব্রত মুখোপাধ্যায় একদা একই দলের সতীর্থ ছিলেন। এগারো সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম মেয়াদে রাজ্যের গ্রামাঞ্চলে যে পাঁচ হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরি হয়েছিল, তার যৌথ কারিগর ছিলেন আসলে এই দু’জনেই। গ্রামীণ সড়ক নির্মাণে প্রবল আগ্রহ ছিল সুব্রতবাবুর, আর কেন্দ্রের তরফে অর্থ সাহায্য করে তাতে যোগ্য সঙ্গত করেছিলেন জয়রাম। শুধু ওই প্রকল্পই নয়, ১০০ দিনের কাজে বাংলা যে সব থেকে বেশি বরাদ্দ পায় তার ভিতও তৈরি হয়েছিল জয়রামের মেয়াদেই। শোনা যায়, প্রশাসনিক সফরে জয়রাম কলকাতায় এলে তিনি স্যুইসোটেলে উঠতেন। আর তাঁর পাশের ঘরটাই ভাড়া নিয়ে রাখতেন সুব্রতবাবু। দু’জনে আড্ডা দিতেন সেখানে। আবার গ্রামোন্নয়ন প্রকল্পে কেন্দ্রের অর্থ বকেয়া হলে বা ১০০ দিনের বকেয়া টাকার অঙ্কটা একটু বড় হলে সুব্রতবাবু নিজে চলে যেতেন দিল্লীতে। কৃষি ভবনে জয়রামের ঘরে বসে সেই টাকা আদায় করে আনতেন। তাই বন্ধুর গ্রেফতারিতে এবার কেন্দ্রের নিন্দায় সরব হলেন জয়রাম।