একসময় তৃণমূলে থাকাকালীন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহের কানন ছিলেন তিনি। কিন্তু সেই শোভন চট্টোপাধ্যায়ই একদিন ‘দিদি’র ছত্রছায়া থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে চলে গিয়েছিলেন বিজেপিতে। কানাঘুষো, এর পেছনে প্রধান কারণ ছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বিজেপিতেও বৈশাখীকে নিয়ে শোভনের জার্নি সুখকর হয়নি। আর শেষমেশ সোমবার, নারদকাণ্ডে তৃণমূলের ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্রদের সঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও গ্রেফতার করল সিবিআই। আর তারপরই দলের সেই তিন নেতার পাশাপাশি শোভনের পাশে গিয়েও দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী। যা দেখে আপ্লুত বৈশাখী। তাঁর উপলব্ধি, “শোভনের পাশে যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী এসে দাঁড়ালেন, তাতে আমি ওঁর জন্য প্রাণ দিতেও প্রস্তুত।”
তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এদিন শোভন চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হতেই নিজাম প্যালেসে হাজির হন তাঁর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়। বৈশাখীর সঙ্গে শোভনের ‘ঘনিষ্ঠতা’ যত বেড়েছে, দূরত্ব বেড়েছে রত্নার সঙ্গে। দিন কয়েক আগেও শোভন-বৈশাখী বনাম রত্না সংঘাতে সরগরম থাকত সংবাদমাধ্যম। সেই রত্না আজ নিজাম প্যালেসে পৌঁছে বলেন, ‘শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির লোক হিসেবে এসেছি। দেখি ওরা কী বলে…’ রত্নার আগমনের পরই খোঁজ শুরু হয়, বৈশাখী কোথায়?
এরপর দুপুর নাগাদ বৈশাখীকে ফোনে ধরা হলে তিনি বলেন, “আমি নিজাম প্যালেসেই আছি। একদিকে গণতন্ত্রের চরম অপমান করল বিজেপি। অপরদিকে, যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী এসে সবার পাশে দাঁড়িয়েছেন, তা একটা নিদর্শন। এ রাজ্যের কারও উপর আক্রমণ নেমে এলে যে তিনিই এগিয়ে আসবেন, তা স্পষ্ট হয়ে গেল। গোটা দেশের কাছে বিজেপি নগ্নভাবে প্রকাশ করে দিল, দুটো তোতাপাখি বসিয়ে রেখেছে।” বস্তুত এদিন বৈশাখী কথা শুধুই মমতা-ময়। তৃণমূল নেত্রী কোনও আন্দোলনের ডাক দিলে যাবেন? বৈশাখীর উত্তর, “উনি বললে নবান্নে ওনার চটিও রেখে আসতে পারি। শোভনের পাশে যেভাবে উনি এসে দাঁড়ালেন, ওনার জন্য আমি প্রাণ দিতেও প্রস্তুত।”