রাজ্য সরকারের নয়া নিষেধাজ্ঞা সফল করতে রবিবার সকাল থেকে কলকাতার ৩০টি জায়গায় থাকছে নাকা চেকিং। প্রত্যেকটি বাজারে ফের নতুন করে কড়াকড়ি পুলিশের। কোনও কারণ ছাড়া গাড়ি বের হলেই তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাতের কলকাতায় যাতে বাইকের দাপট না হয়, সেই ব্যাপারে পুলিশ বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছে। লকডাউনের সময় যাতে কেউ বাড়ি থেকে না বের হন ও পাড়ার কোথাও জটলা না হয়, সেদিকেও বিশেষ নজর রাখছেন পুলিশ আধিকারিকরা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সরকারি নির্দেশ ভাঙা ও ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট আইনে মামলা দায়ের করা হচ্ছে।
এপ্রসঙ্গে পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের অভিজ্ঞতা থেকেই পুলিশ লকডাউন সফল করার স্ট্র্যাটেজি নিয়েছে। রবিবার সকাল থেকেই কলকাতার ৩০টি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এই নাকা চেকিং থাকছে। যেহেতু আপৎকালীন পরিষেবা বাদে যে কোনও গাড়ি চলা নিষিদ্ধ, তাই প্রত্যেকটা গাড়িকে পুলিশ পরীক্ষা করবে। গত বছর দেখা গিয়েছিল যে, লকডাউন থাকা সত্ত্বেও অছিলায় বাইরে বের হওয়ার চেষ্টা করছেন অনেকেই। গাড়ি নিয়ে লকডাউনের ফাঁকা রাস্তা দেখতে বের হচ্ছেন, এমনও দেখা গিয়েছে। সেই কারণেই নাকা চেকিংয়ে থাকা পুলিশকর্মীদের ও আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, অকারণে গাড়ি নিয়ে বের হলেই যেন সেই ব্যক্তিকে ধরা হয়। কোনও কারণ ছাড়াই কেউ হেঁটে ঘোরাঘুরি করলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বেলার দিকে বা দুপুরে কেউ মিষ্টি কেনার নাম করে বের হলেও তাঁকে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হতে পারে।
পাশাপাশি, রবিবার ছাড়া অন্যান্য দিনে ব্যাঙ্কে যাওয়ার নাম করে কেউ বের হলে ব্যাংকের নথি তাঁর কাছে আছে কি না, তাও জানার চেষ্টা হবে। গত বছরও লকডাউন ঘোষণার পর দেখা গিয়েছিল, পাড়ায় জমে উঠেছে আড্ডা অথবা কোনও পারস্পরিক দূরত্ব না মেনেই চলছে আড্ডা। ছুটির মুডে খেলা হচ্ছে ক্যারাম। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এগুলি বন্ধ করতে পাড়ায় পাড়ায় সচেতনতার প্রচার চালাচ্ছে পুলিশ। শনিবার থেকেই শুরু হয়েছে মাইকিং। সূত্রের খবর, প্রত্যেকটি থানার পুলিশ আধিকারিকরা অলিতে গলিতে কমব্যাট ফোর্স নিয়ে টহল দেবেন। এ ছাড়াও টহলে থাকছে প্রত্যেকটি থানার গাড়ি ও বাইক। লালবাজারের বিশেষ টিম ও ট্রাফিক সার্জেন্টরাও নজরদারি রাখবেন।
উল্লেখ্য, সকাল থেকেই কলকাতার প্রত্যেকটি বাজারে মোতায়েন করা থাকছে প্রত্যেকটি থানার বিশেষ টিম। সকাল থেকেই মাইকিং করে বলা হচ্ছে, যেন সকাল দশটার পর কোনও দোকান খোলা না থাকে ও ক্রেতারা যেন সকাল দশটার পর বাজার করতে বের না হন, নির্দিষ্ট সময়ের পরই তাঁরা বাড়িতে চলে যান। একইসঙ্গে প্রত্যেকে যাতে মাস্ক পড়ে থাকেন ও বাজার চলাকালীন পারস্পরিক দূরত্ব মেনে চলেন, সে ব্যাপারেও মাইকিং করা হচ্ছে। গত বছর লকডাউনের সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অঞ্চলের বাসিন্দাদের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এই বছর যাতে শহরবাসী অসুবিধায় না পড়েন, তার জন্য তাঁদের খাবারের প্যাকেট দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।