দেশে আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। রূপ বদলে এখন আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে এই মারণ ভাইরাস। যার জেরে প্রতিদিন ঝড়ের গতিতে বাড়ছে দেশের দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। লম্বা হচ্ছে মৃত্যুমিছিল৷ এদিকে করোনার সঙ্গে লড়াই করার একমাত্র অস্ত্র টিকার জন্য হাহাকার চলছে। গত ১৬ জানুয়ারি থেকে দেশে টিকাকরণ শুরু হলেও, টিকার জোগানে ঘাটতির অভিযোগ উঠে আসছে শুরু থেকেই। বৃহস্পতিবারই কোভিশিল্ডের ২টি টিকার মধ্যেকার ব্যবধান বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রকে তীব্র ভর্ৎসনা করল দিল্লী হাইকোর্ট।
‘আপনাদের ভাঁড়ারে টিকা মজুত নেই। তাও রিং টোনে অনবরত টিকাবার্তা বাজিয়ে যান। মানুষকে সচেতন করার এই পদ্ধতি বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ এমনই মন্তব্য করেছে আদালত। বিচারপতি বিপিন সাংঘি এবং বিচারপতি রেখা পাল্লির বেঞ্চ বলে, ’যখনই ফোন করা হচ্ছে আপনারা বিরক্তিকর মেসেজ শুনিয়ে চলেছেন। আপনারা মানুষকে বলছেন টিকা লাগান, অথচ টিকাকরণ করছেন না। কে টিকা দেবে, যেখানে ভ্যাকসিন মজুতই নেই কোথাও? টিকা না থাকলে লোকে নেবে কী করে!’
উল্লেখ্য, ১৬ জানুয়ারি থেকে দেশব্যাপী গণটিকাকরণ চালু হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৮ কোটি মানুষ টিকা নিতে সক্ষম হয়েছে। তাও প্রথম ডোজ। এই ১৮ কোটির মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ পেয়ে টিকাকরণ সম্পূর্ণ করেছেন মাত্র ৪ কোটি। অর্থাৎ ৫ মাস কেটে গেলেও ভারতের মোট জনসংখ্যার ১০% মানুষেরও সম্পূর্ণ টিকাকরণ হয়নি। কেন? এই প্রশ্নের জবাবে চিকিৎসকরা বলছেন, টিকার অপ্রতুল সরবারহ এবং চাহিদার সঙ্গে জোগানের তারতম্যই এর মূল কারণ। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মত দেশজুড়ে ভয়ঙ্কর অক্সিজেন সংকট ও স্বাস্থ্য পরিষেবার বেহাল দশা, সব মিলিয়ে ঘোর টালমাটাল অবস্থায় কেন্দ্র। তার ওপর দিল্লী হাইকোর্টের এই জোরালো কটাক্ষ অস্বস্থি কয়েক গুণ বাড়িয়েছে মোদী সরকারের।