সর্বপ্রথম যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশে দেখা গিয়েছিল এই ভয়ানক দৃশ্য। এরপর আরও এক বিজেপি শাসিত রাজ্য বিহারেও গঙ্গায় করোনায় মৃতদের দেহ ভাসার ছবি দেখা যায়। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই গোটা দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। গঙ্গায় ভাসতে ভাসতে সেইসব দেহ যাতে বাংলাতে ঢুকতে না পারে, এবার সেই বিষয়ে তৎপর হল রাজ্য প্রশাসন। দেহ ভেসে এলে তা সৎকার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে রাজ্যের তরফে।
ঝাড়খণ্ডের সীমানা ছাড়িয়ে মালদহের মানিকচকে বইছে গঙ্গা। ফলে দেহ বাংলায় ঢুকে পড়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। সেই কারণেই বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কোভিডে মৃতদের দেহের খোঁজে নৌকো নিয়ে মালদহের মানিকচক ঘাটে টহলদারি শুরু করেছে মালদহ জেলা পুলিশ, প্রশাসন এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের ডুবুরিরা। উত্তরপ্রদেশের বন্যার জল অন্তত পাঁচ দিন পর গড়িয়ে আসে মালদহের মানিকচকে। ফলে উত্তরপ্রদেশ থেকে গঙ্গায় ভেসে দেহ এলে তা আজ অথবা শুক্রবারই মালদহের মানিকচক এলাকায় পৌঁছতে পারে। এমনটাই আশঙ্কা জেলা প্রশাসনের। ভেসে আসা দেহের খোঁজে তাই আজ, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নৌকোয় টহলদারি শুরু করা হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় মানিকচক থানার আইসি রঞ্জিত বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমাদের নৌকা এবং বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই গঙ্গায় টহলদারি শুরু করা হবে। কোভিড দেহ পেলে তা উদ্ধারের পর পাঁচ ফুট গর্ত করে পুঁতে দেওয়া হবে।’’ সেই মতোই আজ সকাল থেকে টহলদারি শুরু হয়েছে। যদিও মানিকচকের বিডিও জয় আহমেদ এই বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনও মন্তব্য করতে চাননি। সোমবার ও মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে গঙ্গায় প্রায় শতাধিক কোভিড রোগীর পচাগলা মৃতদেহ ভাসতে দেখা যায়। করোনা পরিস্থিতিতে দেহগুলি সৎকার করতে না পেরে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয় বলেই অনুমান পুলিশের। এবার সেই আতঙ্ক তাড়া করছে বাংলাকে।
জানা গিয়েছে, মালদহের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্রকে এই বিষয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। গঙ্গার মানিকচক ঘাট ঝাড়খণ্ড-লাগোয়া। একপাড়ে মালদহ। অন্যপাড়ে রাজমহল। প্রতিদিন লঞ্চে কয়েকশো মানুষ নদীপথে বিহার-ঝাড়খণ্ডে যাতায়াত করেন। মানিকচক থানার পুলিশ জানিয়েছে, নবান্নের নির্দেশ মেনে মানিকচক ঘাটে বেশকিছু নৌকো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জলপথে আজ থেকে বেশ কড়া নজরদারিই চালানো হচ্ছে।