যেন এক যুগাবসান ঘটলো। চলে গেলেন কেরালার কমিউনিস্ট আন্দোলনের অবিসংবাদী নেত্রী কেআর গৌরী আম্মা। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ১০২ বছর। সূত্রের খবর, বেশ কিছুদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন দেশের প্রথম কমিউনিস্ট সরকারের রাজস্বমন্ত্রী। অবশেষে গতকাল সকালে তিরুঅনন্তপুরমের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাম আন্দোলনের সবকটি ধারায় সমান সাবলীল গৌরী আম্মা।
বর্ণময় সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন তাঁর। প্রায় আট দশক রাজনীতি করেছেন কেরালার ‘লাল’ মাটিতে। সময়ের বাঁকে নিঃশব্দেই কেআর গৌরী মালায়লী জনতার কাছে আম্মা হয়ে উঠেছিলেন। কেরালার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলি বলছে, এখনও পর্যন্ত কেরালার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা আর এক কমিউনিস্ট নেতা ইকে নায়নারের শেষযাত্রায় যে পরিমাণ মানুষের ঢল নেমেছিল তা আর কখনও হয়নি। তাদের বক্তব্য, কেরালার যদি লকডাউন না থাকত তাহলে গৌরী আম্মার শেষযাত্রা তাকেও ছাপিয়ে যেত। এতটাই জনপ্রিয় ছিলেন তিনি।
১৯৫২ সালে প্রথমবার আলাপ্পুঝা থেকে ভোটে জিতেছিলেন গৌরী আম্মা। তখন তাঁর বয়স ৩৩ বছর। সেই সময় গোটা কেরালা জুড়ে কলেরা, পক্স আর প্লেগের সংক্রমণে রীতিমতো মহামারী লেগেছে। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে তরুণী গৌরী সেদিন দাবি তুলেছিলেন, সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে লকডাউনই একমাত্র উপায়। মানুষের খাদ্য, ওষুধ ইত্যাদির ব্যবস্থা করুক রাজ্য সরকার। যাতে তাঁরা নিশ্চিন্তে ঘরে থাকেন।
ইতিহাসের কী অদ্ভুত সমাপতন! মহামারী রোখার দাওয়াই হিসেবে ভারতবর্ষে যিনি প্রথম লকডাউন শব্দটি উচ্চারণ করেছিলেন, তিনিই চলে গেলেন আরও একটি লকডাউনের মধ্যে।